বিএসএফকে সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে মানতে নারাজ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এই বাহিনীকে তিনি ভারতীয় খুনি বাহিনী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
বুধবার (০৯ জুলাই) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় এক পথসভায় তিনি এই কথা বলেন। ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন এনসিপি নেতারা চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছেন।
সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা আমরা কখনোই মেনে নেব না। গত ৫৪ বছরে সীমান্তে হত্যা করা হয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষ। শুধু চুয়াডাঙ্গাতেই সীমান্ত এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০০ জন।’
বিএসএফকে খুনি বাহিনী আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘বিএসএফ কোনো সীমান্তরক্ষী বাহিনী নয়, বরং এটি একটি খুনি বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।’
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের কারণে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বারবার লঙ্ঘিত হয়েছে। আমাদের পানির ন্যায্যহিস্যা দেওয়া হয়নি। অর্থনৈতিকভাবে, সাংস্কৃতিকভাবে বারবার বাংলাদেশকে অবদমন করা হয়েছে।’
তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিগত ১৬ বছর ভারত সরকারের সহায়তায় দেশে গুম, খুন ও দমন-পীড়নের রাজনীতি চালিয়েছে।’
এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আকতার হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরাসরি গণহত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজেই গণহত্যা পরিচালনা করেছেন। অথচ সেই শেখ হাসিনাকে ভারতের বর্তমান মোদি সরকার আশ্রয় দিয়ে রেখেছে। একজন মানবতাবিরোধী অপরাধী, একজন গণহত্যাকারীকে আশ্রয় দেওয়ার দায় ভারতেরই নিতে হবে।’
আকতার বলেন, ‘আমরা ভারত সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ইতিহাসের কাছে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। মোদি সরকারকে মনে রাখতে হবে, গণমানুষের রক্তের দায় কখনও ধোয়া যায় না।’
এদিন পথসভায় এনসিপির ভবিষ্যৎ রূপরেখা ও রাজনৈতিক দর্শন তুলে ধরেন আকতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এনসিপি দেশে নতুন ধারা ও নতুন রাজনীতির সূচনা করতে চায়। আমরা চাই একটি বৈষম্যহীন, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র, যেখানে প্রতিটি মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও ন্যায়ের নিশ্চয়তা থাকবে। হাজারো মানুষ আমাদের এই পদযাত্রায় অংশ নিচ্ছেন, শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন, ভালোবাসা দিচ্ছেন। আমরা সেই ভালোবাসার দায়িত্ব নিতে চাই, নতুন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে নিজেদের উৎসর্গ করে।’
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সার্জিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সদস্য সচিব মোল্লা মো. ফারুক এহসান, ডা. তাসনিম জারা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহসহ চুয়াডাঙ্গা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া বাজারে ‘জুলাই পদযাত্রা’র আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। এরপর দুপুর দেড়টায় আলমডাঙ্গা শহরের আলতাইবা মোড়ে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বেলা আড়াইটায় চুয়াডাঙ্গা শহরের শহীদ হাসান চত্বরে আয়োজিত পথসভাটি ছিল এই কর্মসূচির অন্যতম কেন্দ্রীয় আয়োজন।
পরে বিকেলে দর্শনা ও জীবননগরে আরও দুটি পথসভা শেষে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
আমার বার্তা/এমই