
নির্বাচনের আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর থামাতে পারছে না সরকার। এবার 'ডিড' প্রকল্পের টাকায় উদ্ভাবন শিখতে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন হাইটেক পার্কের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন। ১৫ জনের বহরে বাকি ১০ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কেন এমন সফর তার জবাব দেননি প্রকল্প পরিচালক। তবে সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে উল্টো সাফাই দিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি সচিব।
দৃষ্টিনন্দন সফটওয়্যার পার্ক, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব ও কার্যকর ইকোসিস্টেম তৈরিতে 'ডিজিটাল উদ্যোক্তা এবং উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পে'র কাজ চলছে ২০২১ সাল থেকে। বিশ্বব্যাংকের ঋণে আট স্থানে চলমান প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা আসছে ডিসেম্বরে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, প্রকল্পের পরিধি ও মেয়াদ বেড়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। ৩৫৩ কোটি টাকা থেকে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৫৩১ কোটিতে।
এই প্রকল্পের অর্থে উদ্ভাবন শিখতে তিনদিনের জন্য মালয়েশিয়া যাচ্ছেন ১৫ জন। বহরে রয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা রেজোয়ান আলীসহ হাইটেক পার্কেরই পাঁচ কর্মকর্তা। বাকি ১০ জন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
১০ নভেম্বর থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়াতে অবস্থান করার কথা থাকলেও ভিসা জটিলতায় সময় পেছানো হতে পারে। এই সফরের মাসখানেক আগেই নেদারল্যান্ডস যান প্রকল্প পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। সফরের ব্যয়সহ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি।
ডিজিটাল উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবন ইকো-সিস্টেম উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, এ বিষয়ে বলার জন্য আমি এক্তিয়ারভুক্ত না। সচিব স্যার এ বিষয়ে অবগত আছেন।
তবে নির্বাচনের আগে কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর বন্ধে গত ২১ অক্টোবর পরিপত্র জারি করে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। আর মালয়েশিয়া সফরের জিও জারি হয়েছে গত ২৯ অক্টোবর। সচিবের যুক্তি, বিশ্বব্যাংকের অর্থে বিদেশ সফরে কোনো বাধা নেই।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, যেহেতু এই সফর জিওবি ফান্ডের আওতাভুক্ত নয়, তাই এই সফরে কোনো বাধা নেই।
সফরের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মালয়েশিয়াতে কী ধরনের উদ্ভাবনী হয়েছে, সেটা শেখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভ্রমণ করতে হবে, এর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই সফরের বোঝা জনগণকেই বইতে হবে, তাই সরকারকে এর জবাব দিতে হবে।
গত আগস্ট থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮টি জিও জারি করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এরমধ্যে ৯টি-ই জারি হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নিষেধাজ্ঞার পর।
আমার বার্তা/এল/এমই

