থাইল্যান্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাহজালাল হলের আবাসিক ছাত্র জাকারিয়া হোসাইন সাঈদ।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) তার পরিবার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে (প্রায় রাত ৩টা ৩০ মিনিটে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ আসরের নামাজের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে সাঈদ ৫ আগস্ট থাইল্যান্ডে যান। গত ১৪ অক্টোবর সেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি ও বাকৃবির আরও দুই শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে আহত হন। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে সাঈদকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়, তবে শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
জাকারিয়া হোসাইন সাঈদের মৃত্যুতে বাকৃবি পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়েছে এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানানো হয়েছে।
পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী রায়হান আবিদ বলেন, কিভাবে কি হয়ে যায়! আল্লাহ সাঈদকে জান্নাত নসিব করুন। সাঈদ কি অসাধারণ মানুষ ছিলো! আমরা দুইজন একসাথে যতক্ষণ থাকতাম শুধু হাসতাম। শুধু এজন্য ক্লাসে একসাথে বসতাম না। মাঝে মাঝে স্যাররাও বিব্রতবোধ করতেন। কিন্তু কি হয়ে গেলো! থাইল্যান্ডে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট করা ৩জনের মধ্যে সাঈদ মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলো। এক্সিডেন্টের পর যাকে নিয়ে সবচেয়ে কম টেনশন করেছি আমরা সে হচ্ছে সাঈদ। আজ সকালে শুনি সে আর দুনিয়াতে নেই।
শাহজালাল হলের শিক্ষার্থী রোমান বলেন, আমার হলের ছোটভাই সাঈদ। ও যখন ফার্স্ট ইয়ারে হলে আসে তার কিছুদিন পর ওর মা মারা যায়। ওকে সেদিন কাছে ডেকে বুঝাইছিলাম ভাই সবকিছু আল্লাহর হাতে কষ্ট পাস না তুই। আজ তুই নিজেই আমাদের সবাইকে কাঁদিয়ে এভাবে চলে গেলি ভাই।
আরেক শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ বলেন, সাঈদ আমার হলের বড় ভাই। সকালে এক্সাম দিতে যাওয়ার মুহূর্তে এরকম একটা সংবাদ। কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছি নাহ। আল্লাহ ভাইকে জান্নাত নসিব করুন।
আমার বার্তা/জেএইচ