চাঁদাবাজির কারণে পশুর দাম যেন না বাড়ে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেছেন, ‘যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হট লাইন-১৬৩৫৮) চালু থাকবে।
ফোন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি না করা হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
রোববার (৪ মে) আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন উপলক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোরবানির পশুর অবাধ চলাচল ও পরিবহন নিশ্চিতকল্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
ফরিদা আখতার বলেন, আগামী কোরবানির ঈদে প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের আয়োজন ও ব্যবস্থাপনা ঠিক আছে। চাঁদাবাজির কারণে পশুর দাম যেন না বাড়ে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছি, যেকোনো সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে মনে করছি।
তিনি জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাক ছিনতাইরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জেলা প্রশাসন, জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের যৌথ সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হট লাইন-১৬৩৫৮) চালু থাকবে। যেকোনো সমস্যা সমাধানে ফোন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, মহাসড়কে বা কোথাও কোথাও হাট বসালে যান চলাচলে বাধা-বিপত্তি হতে পারে। এমন কিছু যাতে না হয় এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জেলা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে উপজেলা ও জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশুবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেওয়াসহ যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি না করা হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবাদিপশুর চামড়া ছাড়ানোবিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গবাদিপশু কোরবানির জন্য পশুর চামড়া ছাড়ানো ও সংরক্ষণ বিষয়ে ১৫ হাজার ৩৬৯ জন পেশাদার ও ২১ হাজার ২০৮ জন অপেশাদার মাংস প্রক্রিয়াজাতকারী (কসাই) -কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম চিকিৎসা প্রদান এবং মনিটরিং করবে জানিয়ে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন/পৌরসভার উদ্যোগে প্রতিটি হাটে উপযুক্ত ও নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণপূর্বক ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের ক্যাম্প স্থাপন করাসহ দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট থাকবে। ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের সেবাকর্মীদের জন্য অ্যাপ্রোন, মাস্ক, চেয়ার-টেবিল, বালতি, মগ ইত্যাদি সরবরাহ করা হবে।
গত বছরের মতো এবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় ১৯টি পশুর হাটে পশুর প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য ২০টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য ৫টি কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২টি বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, কন্ট্রোল রুম পরিচালনাসহ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথক টিম গঠন করা হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, সারা দেশে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম প্রাথমিক চিকিৎসা পরামর্শ, কোরবানির পশু নিরাপদ ও কোরবানি উপযোগী কিনা, কোরবানির পশু চেনার উপায়, সঠিক পদ্ধতিতে চামড়া ছাড়ানো ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় করণীয় বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবে। তাছাড়া সারা দেশে বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা প্রদানে নিয়োজিত থাকবে। এ বছর সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিকের (এমভিসি) মাধ্যমে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর বিশেষ ভেটেরিনারি স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হবে।
মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত মনিটরিং টিম ঢাকা শহরে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রম মনিটরিং করবেন। বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত মনিটরিং টিম সংশ্লিষ্ট উপজেলার ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের কার্যক্রম মনিটরিং করবেন।
আমার বার্তা/এমই