
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের উদ্দেশে সম্ভাব্য যুদ্ধের সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি আসিম ইফতেখার আহমাদ।
তিনি বলেছেন, আফগানিস্তান যদি বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামি গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ না করে, তাহলে সব ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেবে পাকিস্তান।
বর্তমানে পাকিস্তানের কয়টি নিষিদ্ধ গোষ্ঠীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে আফগানিস্তান— তার তালিকাও দিয়েছেন তিনি। এই তালিকায় আছে, দায়েশ-কে (আইএস-খোরাসান), তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি), ইস্ট তুর্কমেনিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট, বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি এবং মাজিদ ব্রিগেড।
বৈঠকে এই তালিকা প্রদান করে আসিম ইফতেখার আহমাদ বলেন, “এই গোষ্ঠীগুলোর শত শত নেতাকর্মী বর্তমানে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের আশ্রয়ে আছে। তালেবান সরকারকে অবশ্যই এসব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ এবং যাচাইযোগ্য পদক্ষেপ নিতে হবে। যদি তারা এতে ব্যর্থ হয়, তাহলে নিজেদের নাগরিক, ভূখণ্ড ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাকিস্তান প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেবে।”
আফগানিস্তান কীভাবে এসব গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, সে বিষয়েও নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ব্যাখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের জাতিসংঘ প্রতিনিধি। তিনি বলেছেন, “আমাদের কাছে থাকা গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, তালেবান সরকার তাদের আশ্রয় দিচ্ছে, প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, অস্ত্রের যোগান দিচ্ছে এবং পাকিস্তানের ভূখণ্ডে যৌথভাবে হামলা করছে।”
আসিম ইফতেখার খান জানান, নিষিদ্ধ গোষ্ঠীগুলোর সন্ত্রাসী হামলার কারণে চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এক হাজার ২০০ পাকিস্তানি নাগরিক নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৫০ জন সন্ত্রাসী পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে নিহত হয়েছে। নিহত এই সন্ত্রাসীদের মধ্যে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান— উভয় দেশের নাগরিক রয়েছে।
“আফগানিস্তানে যখন গৃহযুদ্ধ চলছিল, তখন আমরা লাখ লাখ আফগান নিরাপত্তাকে আশ্রয় দিয়েছি। সম্প্রতি গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগের মধ্যেও আফগানিস্তানের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের জন্য জন্য আমরা সম্ভাব্য সব ধরনের প্রচেষ্টা নিয়েছি। সম্প্রতি দোহা এবং ইস্তাম্বুলে দফায় দফায় সংলাপও হয়েছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে এ ইস্যুতে আমাদের সব শান্তিপূর্ণ চেষ্টা ও উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে”, নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেন আসিম ইফতেখার আহমাদ। - সূত্র : জিও টিভি
আমার বার্তা/এমই

