দক্ষিণ কোরিয়া স্কুলে ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ফোন এবং স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি বিল পাস করেছে। শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ফোন ব্যবহার সীমিত করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ দেশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিল দক্ষিণ কোরিয়া।
২০২৬ সালের মার্চ মাস থেকে কার্যকর হবে আইনটি। আইন প্রণেতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা যুক্তি দেন যে, স্মার্টফোন ব্যবহার শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করছে এবং তাদের পড়াশোনায় ব্যয় করা সময় কেড়ে নিচ্ছে।
এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শঙ্কাও আছে। এর পক্ষে বিপক্ষে অনেকে যুক্তি দিয়েছেন। যার মধ্যে শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন। যারা প্রশ্ন তোলেন যে, ক্লাসরুমে এর ব্যবহার বন্ধ করলে আসলেই এটি কাজ করবে কিনা। এর বিস্তৃত প্রভাব এবং এটি আসক্তির মূল কারণকে মোকাবেলা করছে কিনা সেই প্রশ্নও তোলা হয়।
বুধবার বিকেলে বিলটি পাস হয়, উপস্থিত ১৬৩ সদস্যের মধ্যে ১১৫ জন পক্ষে ভোট দেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ স্কুল ইতিমধ্যেই স্মার্টফোন নিষেধাজ্ঞার কোনো না কোনো রূপ বাস্তবায়ন করেছে। তবে তারাই একমাত্র দেশ নয়, যারা এটি করেছে।
ফিনল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মতো কিছু দেশ ছোট পরিসরে ফোন নিষিদ্ধ করেছে, শুধুমাত্র ছোট বাচ্চাদের স্কুলগুলোতে এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে। ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং চীনের মতো অন্যান্য দেশগুলো সমস্ত স্কুলে ফোন ব্যবহার সীমিত করেছে।
কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া এমন নিষেধাজ্ঞা আইনে প্রতিষ্ঠিত করার মতো খুব কম সংখ্যক দেশের মধ্যে একটি।
সিউলের ১৪ বছর বয়সী এক শিশুর মা চোই ইউন-ইয়ং বলেন, আজকালকার শিশুরা তাদের স্মার্টফোন নামিয়ে রাখতে পারে না।
তবে এটি কেবল শিশুদের ক্ষেত্রেই নয়। ২০২৪ সালের একটি সরকারি জরিপ অনুসারে, দেশের ৫ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের প্রায় এক-চতুর্থাংশ তাদের ফোনের উপর অত্যধিক নির্ভরশীল। কিন্তু ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। ৪৩ শতাংশ। বছরের পর বছর ধরে এটি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে, এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি কিশোর-কিশোরী বলেন যে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও স্ক্রোল করার সময় নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। অভিভাবকরা আশঙ্কা করছেন যে, এটি তাদের অন্য কাজ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
সূত্র: বিসিসি
আমার বার্তা/এল/এমই