গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভয়াবহ এক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত-পাকিস্তান। ১৯ দিনের এই সংঘাতে স্মরণকালের ভয়াবহতম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল শত্রুভাবাপন্ন এ দুই প্রতিবেশীর মধ্যে। সীমান্তে প্রতিরাতে দুদেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা তো ঘটেছেই; বিমান ও ড্রোন হামলার পাশাপাশি হয়েছে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও। এক কথায়, পরিস্থিতি বিবেচনায় বড় যুদ্ধের দিকেই যেন ধাবিত হচ্ছিল ভারত-পাকিস্তান। এমনকি একাধিক গোয়েন্দা তথ্যে জানা গেছে, পরমাণু শক্তি প্রয়োগের পর্যায়েই পৌঁছে গিয়েছিল দুই প্রতিবেশী।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান। এই যুদ্ধবিরতির ৬৩ দিন পর এবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের মুখ থেকে জানা গেল, যুদ্ধবিরতি না হলে সত্যিই ভারতের ওপর পরমাণু হামলা করতো কি না তার দেশ।
শনিবার (১২ জুলাই) রাজধানী ইসলামাবাদে একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন শেহবাজ। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের সেনা অভিযানে পাকিস্তানের ৫৫ জন নিহত হয়েছেন। তবে, তার পাল্টা তার জবাবও দিয়েছে ইসলামাবাদ।
এরপরই ভারতের ওপর পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের পরিকল্পনার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয় শেহবাজকে। জবাবে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি একান্তভাবেই শান্তির জন্য। দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে। আগ্রাসনের জন্য নয়।’
গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। প্রথমে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে নয়াদিল্লি, তার পর গত ৬ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে অভিযান চালায় ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। সেই সেনা অভিযানর নাম ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’।
ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জবাবে পাল্টা সেনা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ শুরু করে পাকিস্তান। টানা চার দিন ধরে সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত ও পাকিস্তান।
দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় এই সংঘাত নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলেও। একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে দাবি করা হয়, ভারত-পাক সংঘাত পরমাণু শক্তি প্রয়োগের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও বার বার এই দাবি করেছেন।
আমার বার্তা/জেএইচ