স্বতন্ত্র ইউনানী-আয়ুর্বেদিক কাউন্সিল গঠনের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো আন্দোলনে রয়েছেন সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তারা বলেন, যতদিন পর্যন্ত দাবি না মেনে না নেওয়া হবে, ততদিন লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। তবুও দাবি পূরণ ছাড়া ঘরে ফিরে যাব না।
বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে তারা রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেবা ভবন ঘেরাও করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
এর আগে সকাল ১০টা থেকেই আন্দোলনকারীরা অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক দফা এক দাবি- স্বতন্ত্র কাউন্সিল চাই’, ‘অবৈধ চিঠি বাতিল করো’, ‘ইউনানী-আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক মানে গৌরব, দালাল সিন্ডিকেট মানে লজ্জা’ সহ নানা স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তৃতীয় দিনেও দাবির প্রতি সরকারের নির্লিপ্ততা তাদের হতাশ করেছে।
এদিকে আন্দোলন আরও সুসংহত হচ্ছে এবং নতুন ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও এতে যুক্ত হচ্ছেন।
মো. শহীদুজ্জামান সুমন নামক এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রথম দিন আমরা স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর, এরপর গতকাল এবং আজ মিলিয়ে তিন দিন ধরে আমরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি, অথচ একজন সচিব বা ডিজি পর্যন্ত এসে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি। আমাদের আন্দোলন অবজ্ঞা করলে আমরা এর গতি আরও বাড়াব। এটা শুধু রেজিস্ট্রেশনের প্রশ্ন নয়, এটা সম্মানের প্রশ্ন।
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে সময় দিয়েছি। আলোচনার সুযোগ রেখেছি। কিন্তু তার মানে এই নয়, আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা চলবে অনির্দিষ্টকাল। স্বাস্থ্য খাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েও আমাদের অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
আনিকা তাবাসসুম নামক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, তৃতীয় দিনের আন্দোলন মানে আমাদের ক্লাস, ভবিষ্যৎ, পরীক্ষার ঝুঁকি নিয়েই আমরা রাস্তায় আছি। আমরা রাজনীতি করি না, তবে আমাদের পেশাগত অস্তিত্ব রক্ষা করতেই আজকে এই অবস্থান। এই আন্দোলন কেবল ইউনানী-আয়ুর্বেদিক শিক্ষার্থীদের নয়, এটা পুরো বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থার অধিকার রক্ষার লড়াই।
প্রসঙ্গত, ৩০ জুন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-২ শাখা থেকে পাঠানো একটি অফিস আদেশে ইউনানী‑আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই চিঠি একতরফা, পক্ষপাতদুষ্ট এবং নীতিবিরোধী, যা তাদের রেজিস্ট্রেশন, চাকরি ও উচ্চশিক্ষাকে হুমকির মুখে ফেলছে। এর প্রতিবাদে গত ৭ জুলাই স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ঘেরাওয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শুরু করেন। ৮ জুলাই তারা প্রধান ফটক অবরোধ করেন। এরপর আজ ৯ জুলাই আন্দোলনকারীরা সরাসরি ‘সেবা ভবন’ ঘেরাওয়ের মাধ্যমে চাপ বৃদ্ধি করেন।
আমার বার্তা/জেএইচ