আজ ১৮ অক্টোবর, বাংলা ব্যান্ড সংগীতের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চুর সপ্তমতম মৃত্যুবার্ষিকী। দেখতে দেখতে দীর্ঘ ৭ বছর আইয়ুব বাচ্চুবিহীন কাটালো বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন।
তিনি এদেশের সেরা গিটারিস্টও ছিলেন। এদেশের সংগীতাঙ্গনে তিনিই প্রথম ব্র্যান্ডের গানে নতুন ধারা তৈরি করেন। অসাধারণ গানের কথার সঙ্গে শ্রুতিমধুর সুর, সংগীতায়োজন আর তার ভরাট কণ্ঠে তিনি দর্শককে মুহূর্তের মধ্যেই মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতো। আজও তার গান মাতিয়ে রাখে দর্শককে। হৃদয়কে করে তোলে তোলপাড়।
চট্টগ্রামের এই কৃতী সন্তান ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। গানকে ভালোবেসে সংগীতজীবন শুরু করেন ১৯৭৭ সালে। তার এক বছর পরেই ব্যান্ড জগতে পা রাখেন তিনি।
১৯৮০ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন সোলস ব্যান্ডে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি দলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৯১ সালে তিনি ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড (এলআরবি) ব্যান্ডদল গঠন করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই দলটির সঙ্গেই মেইন ভোকাল হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
তার প্রথম গাওয়া গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। আর প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তবে গানের জগতে সফলতা পান তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’-এর মাধ্যমে।
দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ার জীবনে অসংখ্য গান ভক্তদের উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। গায়কী জীবনে ১২টি ব্যান্ড, ১৬টি একক ও বহু মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছিল তার।
অসংখ্য দর্শকপ্রিয় গানের মধ্যে তার কয়েকটি গান হলো ফেরারি মন, হাসতে দেখো, কষ্ট পেতে ভালোবাসি, চলো বদলে যাই, সুখেরই পৃথিবী ইত্যাদি।
তার সব কালজয়ী গান গাওয়ার সময় তিনি নিজে যেমন দরদ দিয়ে গান গেয়েছেন, তেমনি দর্শকও কেঁদেছে অঝোর ধারায়। আবেগী এসব গানে সুখ, দুঃখ বেদনা, প্রেম, ভালোবাসা, কষ্ট সব অনুভূতিই আলাদা এক মাত্রা পেতো তার কন্ঠে।
২০১৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এই কিংবদন্তী। জীবনের সব আয়োজন ফেলে দরজার ওপাশে চলে গেলেও দরজার এপাশে তিনি রেখে গেছেন তার জন্য কোটি ভক্তের অশ্রুসিক্ত চোখ।
আমার বার্তা/এল/এমই