
দেড় মাস আগে দেশি পুরানো পেঁয়াজের দাম ৭০-৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় স্থির হয়। এই দামে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। তবে হঠাৎ করে ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে পেঁয়াজের দাম আরও ৩০-৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সরকার বাধ্য হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অল্প পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেয়। সরকার ও সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল ভারতের পেঁয়াজ আসলে সিন্ডিকেট ভেঙে দেশি পেঁয়াজেরও দাম কমে আসবে।
তবে, দেশে প্রতিদিন আমদানির পেঁয়াজ আসলেও গত ৩-৪ দিনে পেঁয়াজের দামে লাগাম পড়েনি। এখনো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে এখনো গত অর্থবছরের উৎপাদাতি পেঁয়াজের প্রায় ১ লাখ টন মজুদ রয়েছে। নতুন পেঁয়াজও বাজারে আসতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে অধিক পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলে দেশের কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাই, সরকার প্রতিদিন অল্প পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন দিয়েছে।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালের রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পুরানো পেঁয়াজ প্রতিকেজি ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে, তুলনামূলক ও শিকর গজানো দেশি পুরানো পেঁয়াজ কোথাও কোথাও ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকা দরে। তবে, ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে দুই-একটা দোকান ছাড়া তেমন দেখা যায়নি।
মুগদা বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের যথেষ্ট সরবরাহ না থাকায় আমরা বেশি দামে কিনে আনছি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বড় আড়তদাররা ঠিক করেন কোন দিন কত টাকায় বিক্রি করবে। আমরা তো আনি আর বিক্রি করি। কম দামে আনতে পারলে কমে বিক্রি করি, আর বেশি দামে আনলে বেশি দামে বিক্রি করি।
পাইকারি বিক্রেতাদের অভিযোগ, সরকার পেঁয়াজ আমদানি উন্মুক্ত করেনি। দেখেশুনে কিছু ব্যবসায়ীকে আমদানির জন্য আইপি দেওয়া হয়েছে। এতে বাজারে চাহিদা অনুপাতে পেঁয়াজ না আসায় দাম কমছে না।
কাওরান বাজার আড়তে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচ কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজির দাম ১২০ টাকা। আর আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা দরে।
এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী বলেন, ‘ইন্ডিয়ান পেঁয়াজের সাপ্লাই কম। ইন্ডিয়ার পেঁয়াজ বেশি না আসায় দেশি ও ইন্ডিয়ান কোনোটারই দাম কমাইতে পারছে না আড়তদাররা।
শুধু ঢাকার বাজারেই নয়, চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারেও দেশি পেঁয়াজ কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই

