বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধারের পথে এগোচ্ছে, তবে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি এখনো চাপের মুখে রয়েছে বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)।
গতকাল বুধবার প্রকাশিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) নিয়ে এমসিসিআইয়ের পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, 'রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির গতিশীলতাও পুনরুদ্ধার হচ্ছে, যা সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।'
তবে পতিত সরকারের সময়ে ব্যাংকিং খাতের বিপুল অনিয়ম এবং ঋণ কেলেঙ্কারির ফলে যেসব সমস্যা, সেগুলোসহ এমসিসিআই অর্থনীতির অগ্রগতির পথে কয়েকটি বড় বাধাও তুলে ধরেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত সময়ে ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মারাত্মক দুর্বলতা এবং বড় পরিসরের ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার বিলম্বিত হয়েছে।'
তবে এমসিসিআই আশা প্রকাশ করেছে যে, ব্যাংকিং খাত সংস্কার এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো জিডিপি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখবে।
প্রতিবেদনে বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, 'বিশ্ব জুড়ে চলমান সংঘাত ও অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলতে পারে। এখনো বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে দেশের অর্থনীতি।'
দেশের রপ্তানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত এখন কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ ও এপ্রিল মাসে রপ্তানি আয় বাড়ার পাশাপাশি রেমিট্যান্স আয়ও আশাব্যঞ্জক হারে বেড়েছে, যা ডলারের সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে।
অন্যদিকে, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাংক খাতে অনিয়ম এবং খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি বড় ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে এবং নতুন একটি ব্যাংক সংস্কার কর্মসূচি চালুর কথা বলেছে।
এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদনে সার্বিকভাবে বলা হয়েছে, অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও সেটি দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করতে হলে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
আমার বার্তা/এল/এমই