
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চর ডুমুরিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে আরিফ মিয়া নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় অপর গুলিবিদ্ধ ইমরানকে মুমূর্ষ অবস্থায় মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ভোর ৫টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম আরিফ মিয়া। তিনি পেশায় শ্রমিক।
জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা কান্দি ইউনিয়নে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদ মোল্লা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতিক মল্লিক। অপর পক্ষে রয়েছেন সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক উজির আলী ও তার অনুসারীরা। গত এক সপ্তাহ আগে ওই বিরোধের জেরে তুহিন দেওয়ান নামের এক যুবক খুন হয়। নিহত তুহিন ওয়াহিদ-আতিক গ্রুপের সমর্থক ছিলেন। তুহিন হত্যার প্রতিশোধ নিতে আজ সোমবার ভোর ওয়াহিদ-আতিক গ্রুপের লোকজন প্রতিপক্ষ উজির আলী-আওলাদ গ্রুপের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এতে আরিফ মিয়া নিহত ও ইমরান গুলিবিদ্ধ হয়।
জানা গেছে, ২০২৪ এর ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দল ভারী করতে থাকে বিএনপির দুটি পক্ষই। এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপক্ষের দ্বন্দ্বে আটজন গুলিবিদ্ধ হন।
নিহতের স্বজনরা বলেন, নিহত আরিফ মীর সকালে তার বাড়ির পাশে টিউবওয়েলে মুখ ধোয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন একটি ট্রলারে করে এসে তাকে গুলি করে হত্যা করে। এ সময় তারা ঘুমন্ত গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালায় তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেও বলে জানান নিয়তের স্বজনরা।
নিহতের বোন ফাতেমা বলেন, আমার ভাই নিরীহ লোক ছিল। কোন দল করতো না। আতিক মল্লিক, জাহাঙ্গীর ইউসুফের নেতৃত্বে এক থেকে দেড়শ লোক ভোর ৫টার দিকে ককটেল, বন্দুক নিয়ে আমাদের চর ডুমুরিয়া গ্রামে এসে হামলা চালায়। তারা একাধিক বাড়িতে গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
নিহতের স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, ভোর ৫টা হতে ওরা আমাদের গ্রামে হামলা চালাচ্ছে। আমার স্বামী কোনো দল করত না। শ্রমিকের কাজ করতো। সকালবেলা বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় ওরা ৬০ থেকে ৭০ জন আমার বাড়িতে এসে ওকে গুলি করে চলে যায়।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রুহুল আমিন বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুইজনকে আমাদের হাসপাতালে পৌনে ৮টার দিকে আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে একজন হাসপাতালে আনার আগেই মারা গেছে। অপরজনকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল সাইফুল আলম বলেন, যিনি নিহত হয়েছেন তার মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে আছি। এই অঞ্চলে একাধিক বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে।

