ময়মনসিংহ শহরের হরিকিশোর রায় রোডে অবস্থিত পুরনো একটি ভবনকে বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি বলে দাবি করে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তথ্য ছড়ানো হয়। তবে এসব তথ্য ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মফিদুল আলম।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় ইতিহাসবিদ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন জেলা প্রশাসক। সেখানে সংশ্লিষ্টরা ঐ ভবনটি সম্পর্কে মত দেন যে এটি মূলত প্রখ্যাত দানবীর রণদা প্রসাদের ব্যবহৃত ভবন ছিল, সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের কোনো সম্পত্তি নয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষক ও গবেষক প্রফেসর বিমল কান্তি দে, নাট্যকার ও কথা সাহিত্যিক ফরিদ আহাম্মেদ দুলাল, ঐতিহাসিক স্বপন ধর, শিশু একাডেমির অতিরিক্ত সচিব শিউলী রহমান তিন্নীসহ অনেকে।
ডিসি জানান, “বাড়িটির বিষয়ে দেশে-বিদেশে ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে সিএস, এসএ এবং আরএস খতিয়ান ঘেঁটে দেখা গেছে, কোনো পর্যায়েই সত্যজিৎ রায় বা তার পূর্বপুরুষদের নাম নেই।”
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশু একাডেমিকে এই জমি বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং নিয়ম মেনেই পরিত্যক্ত ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ায় ১৫ জুলাই থেকে ভাঙার কাজ স্থগিত করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, যে বাড়িটি নিয়ে বিতর্ক, সেটি একসময় শশীকান্ত মহারাজ নির্মাণ করেছিলেন তার কর্মচারীদের জন্য। পরবর্তীতে রণদা প্রসাদ এটিকে তার নিযুক্ত ম্যানেজারের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করেন। জমিদারি প্রথা বিলুপ্তির পর ভবনটি সরকারের হেফাজতে আসে এবং শিশুবিষয়ক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ডিসি মফিদুল আলম বলেন, “স্থানীয় ইতিহাসবিদরা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এই বাড়ির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা হয়েছে।”
তবে আলোচনায় অংশ নেওয়া বক্তারা প্রস্তাব দিয়েছেন, যেহেতু বাড়িটির স্থাপত্য ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা মূল্যবান, তাই এটি পূর্বের রূপে সংস্কার করে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
আমার বার্তা/জেএইচ