কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বাসিন্দাদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি আধুনিক সি-অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করা হয়। তবে দীর্ঘদিন সি-অ্যাম্বুলেন্সটি অচল অবস্থায় ঘাটে পড়ে রয়েছে। এতে রোগীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ পরিস্থিতিতে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাহফুজুল হককে হাজির হয়ে সি-অ্যাম্বুলেন্সটি অচল থাকার কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তাকে আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন মহেশখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসাদ উদ্দিন মো. আসিফ।
আদেশে বলা হয়, ২৯ মে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হয়ে সি-অ্যাম্বুলেন্স অচল থাকার বিষয়ে সাতটি প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে হবে।
এ প্রশ্নগুলো হলো, সি-অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকার কারণ কী, অ্যাম্বুলেন্স-সেবা কবে থেকে বন্ধ রয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল কি না, এখন পর্যন্ত কতজন রোগী এই সেবা পেয়েছেন, কারা এই পরিবহন পরিচালনা করেছেন, রক্ষণাবেক্ষণে এ পর্যন্ত কত টাকা ব্যয় হয়েছে, পরিবহনের জন্য নির্ধারিত কোনো নীতিমালা বা ফি রয়েছে কি না, সি-অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কত টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তা কীভাবে ব্যয় হয়েছে এবং চালকের বেতন ও নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ৩ লাখ ৮৫ হাজার জনসংখ্যার দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাবে অনেক সময় সংকটাপন্ন রোগীদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠাতে হয়। তাদের মধ্যে গর্ভবতী নারী, নবজাতক, শিশু, বৃদ্ধ ও দুর্ঘটনায় আহত রোগীর সংখ্যাই বেশি। অথচ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সরবরাহ করা উন্নতমানের সি-অ্যাম্বুলেন্সটি ঘাটে ফেলে রাখা হয়েছে।
আদালত বলেন, মহেশখালী একটি নদীবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন দ্বীপ, যার সঙ্গে স্থলপথে সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই বললেও চলে। এমন পরিস্থিতিতে সি-অ্যাম্বুলেন্স রোগী পরিবহনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ও নিরাপদ বাহন হওয়া সত্ত্বেও সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে, যা তদন্তযোগ্য বিষয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০ (১)(গ) ধারায় আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে বিষয়টি আমলে নেওয়ার এখতিয়ার রাখে।
আদালতের আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশেক ইলাহী শাহজাহান নুরী বলেন, আদালতের আদেশ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে পৌঁছানো হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই