বিয়ের কথা গোপন রেখে সৌদি প্রবাসীর সঙ্গে প্রেম করেন দোলন আক্তার দোলা নামের এক নারী। অতঃপর বিয়ের কথা জানতে পেরে প্রবাসী গাউস মিয়া প্রেমিকা দোলা ও তার স্বামী নাজমুল হোসেন পাপ্পুকে হত্যা করেন।
বুধবার (২৮ মে) দুপুর ২টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বরের বি ব্লকের ১ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হত্যাকারী গাউস মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী দোলা তার স্বামী নাজমুল হোসেন পাপ্পর সঙ্গে মিরপুর ১১ নম্বরের ওই বাড়িতে ৫ তলায় সাবলেট হিসাবে ভাড়া থাকতেন। দোলার পরকীয়া প্রেমিক গাউস মিয়া মিরপুর এলাকার বাসিন্দা। কিছুদিন আগে গাউস মিয়া প্রবাস জীবন শেষ করে মিরপুর ১১ নম্বরে স্থায়ী হন। ঘটনার সময় স্বামী ও স্ত্রীকে ফ্ল্যাটে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এমন নৃশংস হত্যায় কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের পরিবার। চান হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি, এ ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষও।
নিহত দোলা আক্তার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন ও নাজমুল হোসেন পাপ্পু একটি মেডিসিন কোম্পানিতে রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসাবে চাকরি করতেন। দোলার বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলায়। আর ঘাতক গাউসের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়।
গ্রেপ্তার গাউসের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, তিনি সৌদি প্রবাসী। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায়। তিনি সৌদি আরবে থাকার সময় নয় মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে দোলার সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে। গত জানুয়ারিতে অবিবাহিত গাউস সৌদি আরব থেকে ঢাকায় আসেন।
মিরপুর-১১ নম্বরে দোলার বাসার কাছে তিনি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দোলার বাসায় যাতায়াত ছিল তার। বুধবার সকালে দুজনের একসঙ্গে নাশতা করার কথা ছিল। সকাল ৯টার দিকে তিনি দোলার বাসার সামনে যান। এ সময় দেখেন বাসা থেকে বের হয়ে দোলা রিকশায় করে এক ব্যক্তির সঙ্গে যাচ্ছেন। বাসার পাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি দোলার স্বামী। স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে এভাবে দেখে ক্ষোভ সৃষ্টি হয় তার। সেখান থেকে নিজের বাসায় ফিরে যান।
দুপুর দেড়টায় গাউস ছুরি নিয়ে দোলার পাঁচতলার বাসায় গিয়ে কলিং বেল চাপেন। ভেতর থেকে এক নারী দরজা খুলে গাউসের হাতে ছুরি দেখে ভয় পেয়ে বের হয়ে আসেন। তখন গাউস বাসায় ঢুকলে ওই নারী বাইরে থেকে দরজা আটকে দিয়ে ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। এরই মধ্যে ঘরে শুয়ে থাকা দোলার স্বামীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। এরপর দোলাকে একইভাবে খুন করা হয়।
৯৯৯ এ কল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটক করেন গাউসকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, গাউসের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল দোলার। যার জের ধরেই হত্যা করা হয় এই দম্পতিকে। দোলার বিয়ের বিষয়টি জানতেন না গাউস।
পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সালেহ মুহম্মদ জাকারিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই দম্পতিকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার গাউস প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ