জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসেন হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন ও খুনিদের ফাঁসির দাবিতে আদালতপাড়ায় বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতপাড়ায় এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
এ সময় তারা 'আমার ভাইয়ের রক্ত,বৃথা যেতে দেবো না', 'জোবায়েদের রক্ত,বৃথা যেতে দেবো না', 'খুন হয়েছে আমার ভাই,খুনি তোদের রক্ষা নাই', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস', 'আমার ভাই কবরে,খুনি কেনো বাহিরে', 'ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই,খুনিদের ফাঁসি চাই দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন
বিক্ষোভ মিছিল জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, 'জোবায়েদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হোক এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ আর এমন নৃশংস কাজের সাহস না পায়।'
পুলিশ জানায়, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বংশাল থানার ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নুর বক্স লেনের রৌশান ভিলার সিঁড়িঘরে জোবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মাহির রহমান ও বার্জিস শাবনাম বর্ষার মধ্যে নয় বছরের পরিচয় ছিল। তবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক হয় দেড় দুই বছরের।
হত্যার দিন বিকেলে বর্ষার টিউশনির সময় জোবায়েদ রৌশান ভিলায় পৌঁছালে মাহির ও আয়লান সিঁড়ির নিচে ওত পেতে থাকে। সেখানে মাহির জোবায়েদকে বর্ষার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করে এবং একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডা হয়। তখন মাহির ব্যাগ থেকে সুইচ গিয়ার ছুরি বের করে জোবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। হত্যার সময় বর্ষা ভবনের তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে বংশাল থানা পুলিশ।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. মাহির রহমান (১৯), বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।
বংশাল থানার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পরদিন সোমবার রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ভাংনা এলাকা থেকে মাহির রহমান, একই রাতে বর্ষার নিজ বাসা থেকে তাকে এবং পরে শান্তিনগর চামেলীবাগ এলাকা থেকে ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, জোবায়েদ হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯- ২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন।
গত এক বছর ধরে জোবায়েদ হোসাইন পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় ১৫,নুরবক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের এক ছাত্রীকে ফিজিক্স ক্যামেস্ট্রী ও বায়োলজি পড়াতেন। ওই ছাত্রী বর্ষার বাবার নাম গিয়াসউদ্দিন।
এদিন আনুমানিক বিকাল ৪ টার ৪৫ মিনিটের দিকে ছাত্রীর বাসার তিন তলায় তিনি খুন হন। বাসার নিচ তলার সিড়ি থেকে তিন তলা পর্যন্ত সিড়িতে রক্ত পড়েছিলো। তিন তলার সিড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এদিন রাতেই আটক করা হয় জোবায়েদের ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে।
আমার বার্তা/সাদিয়া সুলতানা রিমি/এমই