আইরিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় জয়

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৩, ২১:১৭ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক

সংগৃহীত

তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডতে আয়ারল্যান্ডকে ১৮৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে রানের হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় এটি। এর আগে সবচেয়ে বড় জয় ছিল ১৬৯ রানে। সিলেটে জিম্বাবুয়েকে এই রানে হারিয়েছিল ২০২০ সালে। তিন বছর পর সিলেটেই এবার আইরিশদের উড়িয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে লাল সবুজের দল।

তৌহিদ হৃদয়-সাকিব আল হাসানের ব্যাটে সর্বোচ্চ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল বাংলাদেশ, বাকি কাজটুকু করেছেন বোলাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম ইকবালের দল পেয়েছে রেকর্ড গড়া জয়।  
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইরিশদের ১৮৩ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করে স্কোরকার্ডে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান যোগ করে স্বাগতিকরা। জবাব দিতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রানের বেশি করতে পারেনি সফরকারীরা।

বাংলাদেশের জন্য এটাই রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ২০২০ সালে সিলেটেই জিম্বাবুয়েকে ১৬৯ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা।  

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। মার্ক আডইয়ারের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান ৯ বলে ৩ রান করা অধিনায়ক তামিম ইকবাল। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ৩৪ রানের জুটি গড়েন আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার লিটন দাস। কিন্তু দুজনের কেউই পারেননি ইনিংস লম্বা করতে।  

২ চার ও ১ ছক্কায় ৩১ বলে ২৬ রান করে ক্যাম্পারের বলে স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন। শান্ত লাইন মিস করে বোল্ড হন ম্যাকব্রিনের বলে, ৩৪ বল খেলে ২৫ রান করেন। ৮১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয়।  

সাকিব আল হাসান শুরুর দিকে কিছুটা ভুগেছেন। কিন্তু যত সময় গড়িয়েছে, তিনি হয়েছেন সাবলীল। ৩৫তম ওভারে হ্যারি টেক্টরকে তো দুঃস্বপ্নই দেখিয়েছেন সাকিব। ছয় বলের পাঁচটিতেই চার মেরে নিয়েছেন ২২ রান। প্রায় ১৩৭০ দিন আগে সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া সাকিবের জন্য ছিল বেশ বড় সুযোগ।  

কিন্তু তিনি আউট হয়েছেন খুবই সাদামাটাভাবে। ৯ চারে ৮৯ বলে ৯৩ রান করে গ্রাহাম হিউমের বলে উইকেটে পেছনে ক্যাচ দেন সাকিব। ‘নব্বই’তে এ নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অষ্টমবার আটকে গেলেন তিনি। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে এটি যৌথভাবে সর্বোচ্চবার। তার সঙ্গে তাওহীদের ১২৫ বলে ১৩৫ রানের জুটি দশ ম্যাচ পর মিডল অর্ডারে বাংলাদেশে প্রথম তিন অঙ্ক ছাড়ানো জুটি।  

এরপর ক্রিজে এসে ‘ক্যারিয়ার বাঁচানোর লড়াই’য়ে উতরে যাওয়ার মতো এক ইনিংসই খেলেছেন ‍মুশফিক। সাত নম্বরে নেমে ৩ চার ও সমান ছক্কায় ২৬ বলে ৪৪ রান করেছেন তিনি। পরের পুরো আলোটাই ছিল তাওহীদ হৃদয়ের দিকে। দুর্দান্ত খেলতে থাকা এই ব্যাটার পেতে পারতেন সেঞ্চুরির দেখা।  

তিন অঙ্কের দেখা পেলে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করার কীর্তি হতো। কিন্তু কেবল ৮ রানের জন্য সেটি করতে পারেননি তিনি। হিউমের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তাওহীদ। ৮ চার ও ২ ছক্কার ইনিংসে ৮৫ বলে ৯২ রান করেন তিনি।

শেষদিকে ইয়াসির আলির ১০ বলে ১৭, তাসকিন আহমেদের ৭ বলে ১১ ও নাসুম আহমেদের ৭ বলে ১১ রানে ইনিংসে বাংলাদেশ পায় রেকর্ড গড়া সংগ্রহ। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে চার উইকেট নেন গ্রাহাম হিউম।  

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই হয়েছিল আয়ারল্যান্ডের। স্টেফেন ডোহানি ও পল স্টার্লিং মিলে তাদের এনে দেন ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৮ বলে ৩৪ রান করা স্টেফেনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য দেন সাকিব আল হাসান।

১ চার ও ছক্কায় ৩১ বলে ২২ রান করে স্টার্লিংও ফেরেন এবাদত হোসেনের বলে, উইকেটের পেছনে ক্যাচ নেন মুশফিকুর রহিম। এরপরই যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে আইরিশ ব্যাটিং লাইন আপ। ১৬ রানের ব্যবধানে তারা হারায় ৫ উইকেট। তাসকিন আহমেদ ও এবাদত হোসেনের বোলিং সামলেই উঠতে পারেনি তারা।  

মাঝে কার্টিস ক্যাম্পারকে নিয়ে কিছুক্ষণ চেষ্টা করেন জর্জ ডকরেল। তাদের দুজনের ২৯ রানের জুটি ভাঙেন নাসুম আহমেদ। এই স্পিনার এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন ১৭ বলে ১৬ রান করা ক্যাম্পারকে। এরপরের লড়াইটা একাই লড়েন জর্জ ডকরেল। তিনি আউট হন শেষ ব্যাটার হিসেবে।  

এবাদত হোসেনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৬ চারে ৪৭ বলে ৪৫ রান আসে তার ব্যাট থেকে। বাংলাদেশের বোলারদের ভেতর উইকেটশূন্য ছিলেন কেবল মোস্তাফিজুর রহমান। ৬ ওভারে ৩১ রান দেন তিনি।

এছাড়া তাসকিন ছয় ওভারের দুটিই মেডেন দিয়ে ১৫ রান দেন, নেন দুই উইকেট। নাসুম ৮ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ৩, সাকিব ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ১ ও এবাদত হোসেন ৬ ওভার ৫ বল হাত ঘুরিয়ে ৪২ রান দিয়ে ৪ উইকেট পেয়েছেন।

এবি/ওজি