রাজনৈতিক কারণে রোহিতদের বাংলাদেশ সফরে রাজি নয় ভারত সরকার

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলতে আগামী আগস্টেই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলের। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদল ও ভারতের সঙ্গে বিরূপ সম্পর্কের জের ধরে তাতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। আসন্ন সিরিজ নিয়ে বিসিবিকে সরকারের অনুমতির অপেক্ষায় থাকার কথা জানিয়েছিল রোহিত-কোহলিদের বোর্ড বিসিসিআই। সেই সিরিজ এবার স্থগিত হতে যাচ্ছে!

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, দিল্লিতে একাধিক শীর্ষস্থানীয় সরকারি সূত্রের মতে– বাংলাদেশ সফর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেত পায়নি বিসিসিআই। পুরোপুরি ‘রাজনৈতিক কারণেই’ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে ভারত সরকার সায় দিচ্ছে না, সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে এখন সিরিজ না হলেও পরে আবারও সময়সূচি পুনঃনির্ধারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দিল্লি মনে করছে, এই মুহূর্তে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে শীতল কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে ভারতে যে ধরনের ‘বিরূপ মনোভাব’ দেখা যাচ্ছে– তাতে সে দেশে গিল-রাহুলদের সফর কোনো ইতিবাচক বার্তা দেবে না। বাংলাদেশ-ভারতের এই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা ছিল ১৭ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে। সরকারের এই মনোভাব জানার পর বিসিসিআই এই সফর ‘রিশিডিউল’ করার জন্য বিসিবির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু করেছে, যা বিসিবির কর্মকর্তারাও নিশ্চিত করেছেন।

একাধিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দল বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে গেলে তা সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে একটা ভুল বার্তা দেবে বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। সফরটি এখন অনুষ্ঠিত হলে তাতে রাজনৈতিক ঝুঁকি আছে বলে ভারত সরকার মনে করছে। অন্যদিকে সফর স্থগিত হলে তাতে ভারতের ক্রিকেটীয় ক্ষতি–ও তেমন একটা নেই! আর ঠিক এই কারণেই আগস্টে ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফর এখন এতটা অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।

এর বাইরে দুই দলের এই সিরিজে কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই। ফলে সফর বাতিল হলেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে প্রভাব পড়ার শঙ্কা নেই ভারতের। যে শঙ্কা নিয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তারা দুটি টেস্ট ম্যাচ ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ বাতিল করেনি। ভারতীয় সমর্থকদের একটি অংশ ক্রমাগত হুমকি দিয়ে গেলেও বাংলাদেশ নির্বিঘ্নেই সেই সিরিজ খেলে আসে। যেখানে মাঠের লড়াইয়ে পাত্তা পাননি সাকিব-শান্তরা।

এদিকে, এই সিরিজটি পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেটীয় সম্পর্কে তেমন বিরূপ প্রভাব পড়বে না বলেই আশাবাদী বিসিসিআই। একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বাংলাদেশ আর পাকিস্তান এক নয়, এটা আমাদের মনে রাখতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বহু বছরের। এখন যদি কোনো কারণে সিরিজ না-ও হতে পারে, কিছুদিন পরে সেটা করা যাবে নিশ্চিতভাবেই। বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ারও অনেক আগে থেকে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যে যে আস্থা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও সেটা সাময়িক।’


আমার বার্তা/জেএইচ