লাখে নামলো অপরাধের মাপকাঠি চুনোপুঁটিতেই দৃষ্টি দুদকের!

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১৫:০০ | অনলাইন সংস্করণ

  মেহ্্দী আজাদ মাসুম

ক্ষমতার অপব্যবহার, কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও লুটপাটের অপরাধে জড়িতদের পাকড়াওয়ের দৃঢ় প্রত্যয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক।

কখনো কখনো এই দুদক ক্ষিপ্র (তেজী) বাঘে পরিণত হয়েছে, আবার কখনো নখ-দন্তহীন বাঘে সমালোচিত হয়েছে। রাঘব- বোয়ালদের ধরতে গিয়ে কখনো আবার হোঁচট খেয়ে স্থবির হয়ে পড়েছে।

তবে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ দুদকের দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বচ্ছতা এনেছেন দুর্নীতি তদন্তে স্বাধীন এই প্রতিষ্ঠানে। একই সাথে কিছুটা হলেও গতি ফিরিয়েছেন।

তবে গত রোববার দুদকে দায়ের হওয়া দুটি মামলার দিকে দৃষ্টি ফেরালে মনেই হতে পারে ‘দুদক’ কি আবারো চুনোপুঁটিতেই দৃষ্টি ফেরাচ্ছে! কোটি ছেড়ে লাখে নামছে তাদের অপরাধের মাপকাঠি! 
রাষ্ট্রয়াত্ত পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) দুই কর্মকর্তা  সিবিএ সংগঠন পিজিসিবি শ্রমিক কর্মচারী লীগ-এর দায়িত্বশীল পদে থেকে ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানের ৩,১৫,৪৬৫/-টাকা ও ৫,৪০,৯৩০/-টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে মামলা দায়ের করেছেন দুদকের ঢাকা জেলার সহকারী পরিচালক ধীরাজ চন্দ্র বর্মন।

আর মামলা দুটি দায়েরের জন্য আবেদন করেন দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কর্মরত উপ-পরিচালক বায়েজিদুর রহমান খান। 

বিষয়টি অনেকেরই নজরে এসেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার স্বাধীন প্রতিষ্ঠান ‘দুদক’ কি আবারো কি নখদন্তহীন বাঘে পরিনত হবে?’ তবে সমালোচনাকারীদের এমন আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছেন দুদকের সিনিয়র এক পরিচালক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন, ‘এসব নিয়মিত মামলার একটি অংশ। ছোটখাট মামলা মানেই আমরা রাঘব-বোয়ালদের ছেড়ে দিচ্ছি তা নয়। আসলে কোনো মামলাই ছোট হিসেবে বিবেচনা করা ঠিক নয়। গতকালের মামলা দুটির বিষয় ‘সরকারি অর্থ আত্মসাৎ’। তাই অপরাধের অর্থ কম হলেও গুরুত্বপূর্ণ।’

গতকাল দুদকে দায়ের করা মামলা দুটির সূত্রে জানা গেছে, পাওয়ার গ্রিড অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) জুনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম অফিস সহকারী পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিবিএ সংগঠন পিজিসিবি শ্রমিক কর্মচারী লীগ-এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের -৩,১৫,৪৬৫/- টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনপূর্বক আত্মসাৎ করেছেন (মামলা নং-১৮, তাং- ৩০/১০/২০২৩)।

যা দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একই অপরাধে, একই ধারায় দুদকের ঢাকা জেলার সহকারী পরিচালক ধীরাজ চন্দ্র বর্মন মামলা দয়ের করেছেন পিজিসিবির সিনিয়র হিসাব সহকারী (বর্তমানে বরখাস্ত) নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে।

(মামলা নং-১৯, তাং-৩০/১০/২০২৩)। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তিনি পিজিসিবির দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের - ৫,৪০,৯৩০/- টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের আবেদন করেন দুদকের কেন্দ্রীয় উপ-পরিচালক বায়েজিদুর রহমান খান।

এবি/ওজি