বিলাল (রা.)-এর যে আমলে খুশি হয়েছিলেন প্রিয়নবী (সা.)

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ

  মুজিব হাসান, অতিথি লেখক

রাসুলের মুয়াজ্জিন হজরত বিলালের নিয়ম ছিল, নামাজের কাতারে রাসুলের ঠিক পেছনে দাঁড়াতেন। একদিন ফজরের নামাজের সময় সালাম ফিরিয়ে রাসুল তার মুখোমুখি হলেন। মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করলেন, বিলাল, তোমার কোন আমলটা এমন আশাজাগানিয়া, যার বদৌলতে জান্নাতে তোমাকে আমার আগে চলতে দেখছি? 

রাসুলের কথা শুনে হজরত বিলাল বিপুল বিস্ময়ে চমকিত হয়ে উঠলেন। কিছু বলতে না পেরে তাঁর মুখের দিকে চেয়ে রইলেন। রাসুল স্মিতমুখে ব্যাপারটির খোলাসা করলেন, গেলোরাতে আমি জান্নাতে গিয়েছিলাম। সেখানে এক জায়গায় আমার আগে আগে কাউকে চলতে টের পেলাম। তার জুতার খসখসানি আমার কানে ভেসে আসছিল। 

জিজ্ঞেস করলাম, কে এই ব্যক্তি, যে এত মর্যাদার অধিকারী হতে পেরেছে? আমাকে বলা হলো, আপনার এক উম্মত, তার নাম বিলাল। 

রাসুলের মুখে নিজের মর্যাদার বর্ণনা শুনে বিলাল যেন আনন্দে বাকরোধ হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর তার খেয়াল এলো। তিনি বিনম্র গলায় জানান দিলেন—

আল্লাহর রাসুল, এমন কোনো আশাজাগানিয়া আমল তো আমার নেই—তবে দিনে বা রাতে যখনই আমি অজু করি, তখনই দু’রাকাত নামাজ আদায় করে নিই। বিলালের কথা শুনে রাসুল বললেন, হ্যাঁ, তাহলে সেটা এই আমলের বদৌলতেই হয়েছে।

বিলাল (রা.) ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জিন ছিলেন। তার সুললিত কণ্ঠের আজান মুগ্ধ করতো মুসলমানদের। মদিনার বাইরেও বিভিন্ন সফরে তিনি রাসুল (সা.)-এর মুয়াজ্জিন ছিলেন

রাসুল (সা.)-এর ওফাতের পর তিনি মদিনা ছেড়ে চলে যান এবং সিরিয়ায় বসবাস শুরু করেন। সিরিয়ায় বসবাসের সময় বিলাল (রা.) একদিন স্বপ্নে রাসুল (সা.) দেখলেন। তাৎক্ষণিক তিনি মদিনায় রাসুল (সা.)-এর রওজা জিয়ারতে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। 

রাসুল (সা.)-এর নাতি হাসান ও হুসাইন (রা.) তাকে ফজরের আজান দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। তিনি তাদের অনুরোধ ফিরিয়ে দিতে পারলেন না। মসজিদে নববীর ছাদে দাঁড়িয়ে আজান দেওয়া শুরু করলেন। তার সুললিত কণ্ঠস্বর মদিনার অলিগলিতে প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। দীর্ঘদিন পর মদিনার লোকজন আবারও রাসুল (সা.)-এর যুগের আজানের ধ্বনি শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেস।  তিনি যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বললেন তখন মদিনার নারী পুরুষেরা অস্থির হয়ে কাঁদতে কাঁদতে মসজিদের দিকে দৌঁড়াতে শুরু করেন। 


আমার বার্তা/জেএইচ