মহানবী (সা.) ও আয়েশা (রা.) এর দাম্পত্য জীবন যেমন ছিল

প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫, ১১:৪১ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) ছিলেন রাসূল (সা.) এর একমাত্র কুমারী স্ত্রী। হিজরতের পর রাসূল সা. তাকে বিয়ে করেছিলেন। রাসূল (সা.) তার জীবনের অন্তিম সময়টুকু আয়েশা (রা.)-এর ঘরে অতিবাহিত করেন। এমনকি তার মৃত্যুও হয় আয়েশা (রা.)-এর কোলে মাথা রেখে। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মৃত্যু ঘনিয়ে এলো আর তার মাথা আমার রানের ওপর, তখন কিছু সময় তিনি বেহুঁশ হয়ে রইলেন। হুঁশ ফিরে এলে তিনি ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহ! মর্যাদাসম্পন্ন বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত করুন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৬১৯১)

হজরত আয়েশা (রা.) ২২১০টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। যেকোনো বিষয়ে সাহাবায়ে কেরাম তার দ্বারস্থ হতেন। রাসুল (সা.)–এর কাছ থেকে তিনি ইসলাম সম্পর্কে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেছিলেন।

নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে আয়েশা (রা.)-এর দাম্পত্য জীবন ছিল অত্যন্ত মধুর, যা মুমিন নর-নারীর জন্য উত্তম আদর্শ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ও আয়েশা (রা.) ছিলেন পরস্পরের ভালোবাসায় তৃপ্ত। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ভালোবেসে কখনো কখনো আমার নাম হুমায়রা বা লাল গোলাপ বলে ডাকতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪৭৪)

রাসূল (সা.) আয়েশা (রা.) এর যত্নের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি একদিন হাবশিদের খেলা দেখছিলাম। তারা মসজিদের আঙিনায় খেলা করছিল। আমি খেলা দেখে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখছিলাম। তখন নবী (সা.) তাঁর চাদর দিয়ে আমাকে আড়াল করে রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২৩৬)

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি ও রাসুলুল্লাহ (সা.) একই পাত্র থেকে গোসল করতাম, যা আমাদের মধ্যে থাকত। তিনি আমার চেয়ে অগ্রগামী হলে আমি বলতাম, আমার জন্য রাখুন! আমার জন্য রাখুন!! (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৩২১)

আয়েশা (রা.) বলেন, আমি হাড় থেকে গোশত কামড়ে নিতাম। তারপর আমি যেখানে মুখ রাখতাম রাসুলুল্লাহ (সা.) সেখানে তার মুখ রাখতেন। অথচ তখন আমি ঋতুমতী ছিলাম। আমি পাত্র থেকে পানি পান করতাম। তারপর তিনি সে স্থানে মুখ রাখতেন, যেখানে আমি মুখ রাখতাম। অথচ আমি তখন ঋতুমতী ছিলাম। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ৭০)

আয়েশা (রা.) বলেন, আমি ঋতুমতী অবস্থায়ও নবীজি (সা.)-এর চুল আঁচড়ে দিতাম। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ২৭৭)

আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) আমার কোলে মাথা রাখতেন এবং কোরআন তিলাওয়াত করতেন। অথচ আমি ঋতুমতী ছিলাম। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৬৩৪)

মহানবী (সা.) ও আয়েশা (রা.) পরস্পরের আবেগ-অনুভূতির প্রতি সচেতন ছিলেন। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বললেন, আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশি থাকো এবং কখন রাগান্বিত হও। আমি বললাম, কী করে আপনি তা বুঝতে পারেন? তিনি বললেন, তুমি প্রসন্ন থাকলে বলো, না! মুহাম্মাদের রবের কসম! কিন্তু তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বলো, না! ইবরাহিমের রবের কসম! শুনে আমি বললাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রাসুল! সে ক্ষেত্রে আমি শুধু আপনার নাম উচ্চারণ করা থেকেই বিরত থাকি। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২২৮)


আমার বার্তা/জেএইচ