কোরআন শিক্ষা কি বিয়ের মোহর হতে পারে?

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫, ১২:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ইসলামে বিয়ের সময় মোহর নির্ধারণ করা ওয়াজিব। মোহর নির্ধারণ না করলেও মোহরে মিসিল বা স্ত্রীর সমান সামাজিক মর্যাদার অন্য নারীদের বিয়ের স্বাভাবিক মোহর তাকে দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়। বিয়ের মোহর পরিশোধ করা স্বামীর ওপর ফরজ। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,

وَ اٰتُوا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَۃً فَاِنۡ طِبۡنَ لَکُمۡ عَنۡ شَیۡءٍ مِّنۡهُ نَفۡسًا فَکُلُوۡهُ هَنِیۡٓــًٔا مَّرِیۡٓــًٔا

আর তোমরা নারীদেরকে উপহার হিসেবে তাদের মোহর দিয়ে দাও, তারপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খেতে পার। (সুরা নিসা: ৪)

ইসলামি শরিয়তে বিয়ের মোহর কোনো সম্পদ হওয়া জরুরি। শরিয়তের দৃষ্টিতে সম্পদ নয় এমন কোনো বস্তু/বিষয়কে মোহর হিসেবে নির্ধারণ করা যায় না। তাই পবিত্র কোরআন শিক্ষা দেওয়া অর্থাৎ বিয়ের পর স্বামী স্ত্রীকে কোরআন পড়াবেন, কোরআন পড়তে বা বুঝতে শেখাবেন এটা বিয়ের মোহর হতে পারে না। কারণ শরিয়তে কোরআন শিক্ষা দেওয়াকে সম্পদ গণ্য করা হয় না।

কোনো বিয়ের আকদের সময় যদি কোরআন শিক্ষা দেওয়াকে মোহর হিসেবে নির্ধারণ করে বিয়ে পড়ানো হয়, তাহলে ওই বিয়ে হয়ে যাবে, কিন্তু স্বামীর ওপর ‘মোহরে মিসিল’ অর্থাৎ স্ত্রীর সমান সামাজিক মর্যাদার অন্য নারীদের বিয়েতে সাধারণত যে পরিমাণ অর্থ বা স্বর্ণ মোহর হিসেবে নির্ধারিত হয় ওই পরিমাণ অর্থ বা স্বর্ণ স্ত্রীকে মোহর হিসেবে দেওয়া ওয়াজিব হবে। আকদ অনুযায়ী কোরআন শিক্ষা দিলে মোহর আদায় হবে না।

স্ত্রী চাইলে মাফ করে দিতে পারে

মোহর স্ত্রীর পাওনা যা সে চাইলে পুরোপুরি বা আংশিক ক্ষমা করে দিতে পারে। স্বামী মোহর আদায় করার পর স্ত্রী যদি মোহরের কিছু অংশ বা পূর্ণ মোহর স্বেচ্ছায় স্বামীকে দিয়ে দেয়, তাহলে স্বামী তা নিয়ে নিতে পারে। একইভাবে মোহর আদায়ের আগেও স্ত্রী যদি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় কোনো রকম চাপপ্রয়োগ ছাড়া বিয়ের মোহর মাফ করে দেয়, তাহলে মোহর মাফ হয়ে যাবে।

বিয়ের পর মোহর বৃদ্ধি করার বিধান

বিয়ের আকদের সময় যে মোহর নির্ধারণ করা হয়, আকদের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে চাইলে তা বৃদ্ধি করতে পারে। স্ত্রী যদি মোহর বৃদ্ধির অনুরোধ করে এবং স্বামী স্বতস্ফূর্তভাবে তাতে রাজি হয়, তাহলে ওই বর্ধিত অংকও মোহরের সাথে যুক্ত হয়ে যায় এবং তা আদায় করাও ওয়াজিব হয়ে যায়।

যেমন বিয়ের আকদের সময় মোহর হিসেবে যদি চার লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়, বিয়ের পর স্ত্রী মোহর বাড়ানোর দাবি করলে স্বামী তাতে সম্মত হয়ে ছয় লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে, তাহলে মোহর হিসেবে ছয় লক্ষ টাকাই আদায় করতে হবে।