ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি

শতাধিক চুরির ঘটনা জানেন না পিডি!

প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  বশির হোসেন খান

  প্রিন্ট ভার্সন

ফাইল ফটো

# চুরির সঙ্গে আমি জড়িত নই। এই প্রকল্প আমার নয়, ডেসকোর: মোহাম্মদ শাহেদ মাহবুব ভূঞা, প্রকল্প পরিচালক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ডিপিডিসি
# এ অবস্থা চলতে থাকলে ভূগর্ভস্থ এ প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে না। : ড. তৌহিদুল হক, শিক্ষক ও অপরাধ বিশ্লেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

# ডিপিডিসি-সিটি করপোরেশনের কর্মচারী সরাসরি চোর চক্রে জড়িত: এইচ এম আজিমুল হক, উপ-কমিশনার, তেজগাঁও বিভাগ, ডিএমপি

# ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে : আরফিন আরা বেগম, অতিরিক্ত সচিব, পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ডিপিডিসি

 
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ১০০টি ভূগর্ভস্থ কেবল চুরির ঘটনা ঘটলেও তা জানেন না প্রকল্প পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) মোহাম্মদ শাহেদ মাহবুব ভূঞা।

বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধান বলছে, এ সব চুরির ঘটনায় ডিপিডিসি ও ডিএনসিসির কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারী এবং স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতারা জড়িত।

তবে এই চুরির ঘটনায় ডিপিডিসির জড়িত কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী ছাড় পাবে না বলে জানিয়েছে পরিচালনা পর্ষদ।
সংশ্লিষ্ট ও পুলিশ সূত্র বলছে  ডিপিডিসির ভূগর্ভস্থ কেবল স্থাপন কাজে এবার নতুন বাধা সংঘবদ্ধ চক্র। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে শিশু মেলা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকায় ভূগর্ভস্থ কেবল স্থাপনের সময় চুরি হয়।

পুলিশের কাছে সংরক্ষিত সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জন চোর তার চুরির পর, নিয়ে যাচ্ছে পিকআপে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা থানায় ৬০ মিটার তার চুরির মামলা করে ডিপিডিসি।

ফুটেজ দেখে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয় ৬ জনকে। উদ্ধার করা হয় বসিলায় গুদামে পুতে রাখা প্রায় ১ হাজার কেজি তার। চক্রটি তার চুরি করে বিশেষ কায়দায় গলিয়ে ছোট ছোট পিস করে পাঠাচ্ছে দেশের বাইরে।

বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও সরবরাহ নিশ্চিতে মহানগরে ভূগর্ভস্থ কেবল স্থাপনের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে। তবে, সমন্বয়ের অভাবে এ কাজে নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি। ডিএমপির তথ্য বলছে, এক বছরে শতাধিক চুরি হলেও মামলা হয়েছে মাত্র ১৭টি। 
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক বলেন, সংঘবদ্ধ চক্রে রয়েছে ডিপিডিসি-সিটি করপোরেশনের কর্মচারী। ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু হলে দুই সংস্থা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তায় চুরি হয় তার। পরে সেগুলো গুদাম থেকে বিশেষ কায়দায় বিদেশে পাঠিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা।
এ ব্যাপারে পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম ডেভেলাপমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী) মোহাম্মদ শাহেদ মাহবুব ভূঞা বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। এই প্রকল্প আমার নয়। এটি ডেসকোর প্রকল্প।   
অতিরিক্ত সচিব, ডিপিডিসি পরিচালনা পর্ষদ সদস্য আরফিন আরা বেগম দৈনিক আমার বার্তাকে বলেন, তার চুরির ঘটনা আমি জানি না।

ডিপিডিসির প্রকল্প পরিচালকের নাম শোনা যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকবে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।  
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, শুধু চাকরিচ্যুত বা প্রত্যাহার নয় জড়িত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নিতে হবে ফৌজদারি ব্যবস্থাও। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভূগর্ভস্থ এ প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে না।