প্রস্তাবিত বাজেটকে ‘স্মার্ট লুটপাটের’ বললেন আমীর খসরু

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১৯:৪০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে স্মার্টভাবে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার ও ব্যাংক লুটপাটের বাজেট বলে অবিহিত করেছেন।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, বাজেট হলো জনগণ ও রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন। আজকে যারা ক্ষমতায় তারা অবৈধ ও দখলদার। তাদের তো রাজনৈতিক ও মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না। তাদের নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে নিজের বাসায় গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে তিনি এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট অবশ্যই স্মার্ট বাজেট- এত স্মার্টলি লাখ লাখ কোটি টাকা কোনো সরকার বা দলের লোকজন পাচার করতে পারবে? এত স্মার্টলি ব্যাংক লুটপাট, সিন্ডিকেট পরিচালনা, জনগণের সম্পদ লুট করতে পারবে? সেদিক থেকে এ বাজেট অবশ্যই স্মার্ট বাজেট।

প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় বাসায় গোয়েন্দা সদস্যদের উপস্থিতি প্রসঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গোয়েন্দা বাহিনী আমার বাসায় ঢোকে- তাদের কাজটা কী? আমি কি বাজেট প্রতিক্রিয়াও দিতে পারব না? তাদের উপস্থিতি তো প্রমাণ করে, বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সুযোগও নেই। তারা জনগণের ও বিরোধীদলের প্রতিক্রিয়া শুনতে রাজি না। এরকম একটি সরকার জনগণের জন্য কি বাজেট দিবে? আমরা তো ইতোমধ্যে দেখেছি, বাংলাদেশে অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?

তিনি বলেন, সরকার এমন অর্থনীতির মডেল শুরু করেছে, ‘প্যাট্রন ক্লাইন্ট ইকোনমি’ অর্থাৎ পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি। এর মানে হচ্ছে- যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে তারাই কিন্তু দেশে লাভবান হবে। এখানে দলীয় লোকদের লাভের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ভাড়া, চাঁদা ও কমিশনভিত্তিক অর্থনীতি। কাজ করতে হলে তাকে ভাড়া, চাঁদা ও কমিশন দিতে হবে। এর দায়ভার বহন করছে সাধারণ জনগণ। তাদের ওপর ব্যয় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে সরকার। পুরো অর্থনীতিকে একটি শ্রেণি নিয়ন্ত্রণ করছে।

আমীর খসরু বলেন, দেশের ৪২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্য হয়েছে। আওয়ামী অর্থনীতির নতুন মডেলের কারণে ঢাকায় ৫২ শতাংশ নতুন দরিদ্র। আসলে লাভ শুধু আওয়ামী লীগের। দেশের মানুষ গরিব হচ্ছে। জীবনযাত্রার মান কমছে। তারা অর্থনীতির যে মডেল করেছে সেটি শুধু সাধারণ মানুষের পকেট থেকে টাকা বের করার ফন্দি।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক হাজার হাজার কোটি টাকা ছাপাচ্ছে। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। গত ৭ বছরে ৫২ শতাংশ ঋণ বেড়েছে। সরকার দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে ঋণ নিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, অন্য ব্যাংক ও বিদেশ থেকে ঋণ নিচ্ছে। এ ঋণের দায় তো নতুন প্রজন্মকে বইতে হবে। যেই বৈদেশিক ঋণ ৮-১০ হাজার কোটি টাকা ছিল সেটি এখন ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মুষ্টিমেয় লোক বড়লোক হচ্ছে। যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। অথচ বাংলাদেশে রিজার্ভে টাকা নেই। তাদের সিন্ডিকেট বড়। আমদানি না থাকার কারণে দেশের মানুষের কাছে পণ্যের হাহাকার, দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। এটাও তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। সিন্ডিকেট বিদ্যুতের ফিক্সড চার্জের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছে। জনগণে পরিশোধ করছে। তারা বিদ্যুৎ-গ্যাসের মাধ্যমে এ টাকা নিয়ে যাচ্ছে।

এবি/ জিয়া