জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনুন, শান্তি ফিরবে দেশে: কাদের সিদ্দিকী
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৩২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্দেশে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, জনগণকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দিতে পারলেই দেশে শান্তি ফিরবে। অতীতে নির্বাচন কমিশন সরকারের ‘মন্ত্রী' হিসেবে কাজ করেছে। এবার ইসির সামনে আস্থা ফেরানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে কাদের সিদ্দিকী এসব কথা বলেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সংলাপের দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেন কাদের সিদ্দিকীর দলসহ মোট ছয়টি দল।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সভাপতিত্বে সংলাপে অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আজ আমি প্রস্তাব দিতে আসিনি। এসেছি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সম্মান জানাতে এবং সংলাপে অংশ নিতে। সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার বিষয়ে আমার অনীহা বহুদিনের। ১৫ মাস হলো, সরকার ডাকলে আর যাই না। নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’ তিনি বলেন, নিবন্ধিত দল ৪০–৫০টি হলেও আলোচনা হয় দুই–তিনটির সঙ্গে। এটি কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। অতীতে এমন অবস্থাও তৈরি করা হয়েছিল যেন ‘শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, ‘জয় বাংলা বলা অপরাধ হতে পারে না। এই স্লোগানের জন্য মানুষকে কারাবন্দি করা হলে ইতিহাসের কাছে জবাব দিতে হবে।’
নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব নিয়ে তিনি বলেন, তপশিল ঘোষণার পর ইসি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। সরকারের দায়িত্ব শুধু ইসির সিদ্ধান্ত পালন করা।
অতীত নির্বাচন প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘নিজের অভিজ্ঞতা বলছে, ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে। এক কেন্দ্রে ১৭০৮ ভোট ২৬০০-তে উন্নীত হয়েছে। মানুষ তিন তিনবার ভোট দিতে পারেনি। না খেয়ে থাকতে রাজি, কিন্তু ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা সহ্য করতে রাজি না।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলন পরবর্তী সময়ে কিছু রাজনৈতিক শক্তি মুরুব্বিদের মানে না। বাংলাদেশের ইতিহাসকে অস্বীকার করে। যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। টাকা খেলে বা মানুষ মারলে শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আন্দোলনের কারণে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। যদি বলেন, শেখ হাসিনা অপসারণের কারণে শাস্তি দিতে হবে, তাহলে আল্লাহকে শাস্তি দিতে হবে।’
গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে করার সিদ্ধান্তকে ‘বড় অসংগতি’ আখ্যা দিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, চারটি প্রশ্নে ভোটাররা দুইটি ‘হ্যাঁ’ এবং দুইটি ‘না’ দিতে পারবে কিনা, তা জনগণ জানে না। অংশগ্রহণ কম হলে পুরো নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তিনি জানান, ড. ইউনূসের সরকার তাদের দলকে একটি বৈঠকেও ডাকেনি। তাই ইসির আমন্ত্রণে তিনি সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন, ‘জনগণকে যদি ভোট দিতে পারে, তাহলেই দেশে শান্তি ফিরবে। সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্ত দেশ হতে পারে বাংলাদেশ।’
সাধারণ মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, রিকশাওয়ালা, ক্ষেতমজুর—এই সাধারণ মানুষের সম্মানের জন্যই দেশ স্বাধীন হয়েছিল।
আমার বার্তা/এমই
