ভোটের নতুন জরিপে এগিয়ে বিএনপি, পরের অবস্থানে জামায়াত
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:২১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের নতুন একটি জরিপ প্রকাশ করেছে বেসরকারি সংস্থা ইনোভিশন। এতে সুস্পষ্ট ব্যবধানে বিএনপি এগিয়ে রয়েছে। এর পরের অবস্থানেই আছে জামায়াতে ইসলামী। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ তৃতীয় অবস্থানে থাকলেও নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) তেমন কোনো অবস্থান নেই। তবে জাতীয় পার্টির অবস্থান আরও তলানিতে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় আর্কাইভস অডিটোরিয়ামে ইনোভিশন কনসাল্টিং ফার্ম ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে।
জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেন ইনোভিশন কনসাল্টিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াৎ সরোয়ার। অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর, ব্রেইন এর নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান, ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার জাইমা ইসলাম।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ না নিলে ৪৫.৬ শতাংশ ভোট পাবে বিএনপি। জামায়াতে ইসলামী পাবে ৩৩.৫ শতাংশ এবং ৪.৭ শতাংশ ভোট পাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩.৮ এবং জাতীয় পার্টিকে ২.১ শতাংশ ভোটার ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিলে ১৮.৮০ শতাংশ ভোট পেতে পারে। এক্ষেত্রে বিএনপি ৩৯.১ শতাংশ, জামায়াত ২৮.১ শতাংশ, এনসিপি ৪.১০ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
জরিপ বলছে, আওয়ামী লীগের ২০ শতাংশ ভোটার বিএনপিকে, ১৪.৮ শতাংশ জামায়াতকে এবং ২.১ শতাংশ ভোটার এনসিপিকে ভোট দিতে আগ্রহী।
পরবর্তী সরকার গঠনে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা বিএনপির। ৩৯.১ শতাংশ ভোটার মনে করেন বিএনপি সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে ২৩.৩ শতাংশ ভোটারের ধারণা জামায়াত সরকার গঠন করতে পারে। ১২.১ শতাংশ ভোটার মনে করেন আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠন করবে। আর নতুন দল এনসিপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন ৩.৮ শতাংশ ভোটার।
বিভাগভিত্তিক জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ৬টি বিভাগে বিএনপি এগিয়ে আছে। অন্যদিকে রংপুর বিভাগে জামায়াত, বরিশাল বিভাগে আওয়ামী লীগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে এনসিপি এগিয়ে আছে।
জরিপটির মোট নমুনা আকার ছিল ১০ হাজার ৪১৩ উত্তরদাতা। এর মধ্যে ৬৯.৫ শতাংশ গ্রামের এবং ৩০.৫ শতাংশ শহুরে, তারা ভোট দেওয়ার যোগ্য। নমুনা কাভার করেছে আটটি বিভাগের ৬৪টি জেলা এবং ৫২১টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিট।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে বিএপির প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ৮.২ শতাংশ মানুষ, যেখানে জামায়াতের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ১৩.৭ শতাংশ। এছাড়া এনসিপির প্রতি সন্তুষ্ট ৯.১ শতাংশ মানুষ। আর পতিত আওয়ামী লীগের প্রতি সন্তুষ্টি জানিয়েছেন ৬.৩ শতাংশ মানুষ।
জরিপে উঠে এসেছে, সন্তুষ্টির পাশাপাশি জরিপে অংশগ্রহণকারীরা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তাদের অসন্তুষ্টিও জানিয়েছেন। যেখানে বিএনপির কার্যক্রমে একদমই সন্তুষ্ট না ১৪.৫ শতাংশ মানুষ। জামায়াতের প্রতি ১৪.১ শতাংশ, এনসিপির প্রতি ২১.৫ শতাংশ এবং আওয়ামী লীগের প্রতি ২০.২ শতাংশ মানুষ একদমই সন্তুষ্ট না।
জরিপে উঠে এসেছে, এবারের নির্বাচনে ৬৫.৫ শতাংশ মানুষ প্রার্থীর যোগ্যতা দেখে ভোট দিতে আগ্রহী। যেখানে মাত্র ১৪ শতাংশ মানুষ ভোট দেবেন দলীয় প্রতীক দেখে।
এর আগে গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জরিপের প্রথম পর্ব প্রকাশ করে ইনোভিশন কনসালটিং। সেখানে ছিল নির্বাচনী পরিবেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মদক্ষতার প্রতি জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি।
এই জরিপে দেশের ৬৪ জেলায় ১০ হাজার ৪১৩ জন উত্তরদাতা অংশ নিয়েছেন, যা ১৫০টি আসনের প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি জাতীয় নির্বাচনী প্রবণতা নিয়ে এ পর্যন্ত পরিচালিত সবচেয়ে বড় ও বিস্তৃত ফেস-টু-ফেস হাউসহোল্ড সার্ভে বলে দাবি করেছে ইনভেশন।
আমার বার্তা/এমই