কোন 'ব্যানার' ছাড়াই তড়িঘড়ি করে শেষ হলো "সাঈদীর জীবন ও কর্ম" শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ

  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

পুলিশী বাধার মুখে কোন 'ব্যানার' ছাড়াই জাতীয় প্রেসক্লাবে তড়িঘড়ি করে শেষ হয়েছে "আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবন ও কর্ম" শীর্ষক সেমিনার। পুলিশী বাধার মুখে অনেক অতিথি আসতে পারেনি।

আগত অতিথিরাও মন খুলে বক্তব্য দিতে পারে নি। সঞ্চালক বার বার দ্রুত বক্তব্য শেষ করতে তাগাদা দিচ্ছেন।পুলিশের নির্দেশে আগত অতিথি ও দর্শকদের কাছে বিতরণের জন্য আনা "নাস্তা" ফেরত দেওয়া হয়।

এমন দৃশ্য দেখা গেছে আজ ৭ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩য় তলায় শহীদ আবদুস সালাম হলে "ইসলামী দা'ওয়াহ ইনস্টিটিউট (আইডিআই) এর উদ্যোগে আয়োজিত "শহীদ আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি:) এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক" সেমিনারে।

গতকাল আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে "শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জীবন ও কর্ম" শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত  হবে বলে মেসেজ দিলেও আজকে সেমিনারে গিয়ে দেখা যায় কাছাকাছি "ভিন্ন টপিক"। 

গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের নিষেধের কারণে আয়োজক কমিটির প্রবন্ধের নাম পরিবর্তনে বাধ্য হন। প্রবন্ধের নাম লিখা হয় " বাংলাদেশে আন্ত: ধর্মীয় সহাবস্থান ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আলেম সমাজের ভূমিকা"। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন ইসলামী ইউনিভার্সিটির( কুষ্টিয়া) দাওয়া এন্ড ইসলামি স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক  অধ্যাপক ডক্টর মোঃ ইকবাল হোসেন।

প্রবন্ধে ইসলামের আবির্ভাব,বিকাশ, ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম এর আগমন, বাংলাদেশে ইসলাম এর প্রভাব আলোচনা শেষে আন্ত:ধর্মীয় সহাবস্থান নিশ্চিতে মাওলানা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অবদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারের একটি অন্যতম মাধ্যম হল ওয়াজ মাহফিল।

১৯৬৭ সালে তিনি এ দাওয়াতে সম্পৃক্ত হন।১৯৭৯ সালে দাওয়াতী কাজের অংশ হিসেবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। পিরোজপুর -১ আসন থেকে জামায়াত ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দুই বার এমপি নির্বাচিত  হন।আশির দশকে তাঁর ওয়াজ মাহফিল ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। সমাজবিজ্ঞানের ভাষায় তাফসির মাহফিলের প্রভাবিত এই যুগকে "তাফসিরে সাঈদীর যুগ" বলা হয়।

বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কুরবান আলী,
সভাপতিত্বে এবং ইসলামী দাওয়াহ ইনস্টিটিউট (আইডিআই) এর সেক্রেটারি মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে 
 প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার  বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ । তিনি ১২ মিনিটের পুরো বক্তব্যে একবারও আল্লামা  দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নাম মুখে নেননি। তিনি পৃথিবীর বুকে ইসলাম এর আবির্ভাব, বিকাশ এবং চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে বলেন, ইসলামের মতো এত এডভান্স কনসেপ্ট ( অগ্রসর ধারণা) পৃথিবীতে 
দ্বিতীয়টি খোঁজে পাওয়া যাবে না।এতো ডাইনামিক ধারণা কোথাও নেই। সৃষ্টির আদিতে কী ছিল, সৃষ্টির শুরুতে কী ছিল এবং পরে কী হবে তা পৃথিবীর অন্য কোন বইতে পাওয়া যাবে না।

 অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনবিদ ও শিক্ষক ব্যারিস্টার তাসনিম ফেরদৌস  বলেছেন, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় সচরাচর জামায়াত প্রার্থী দেয় না। কিন্তু আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ব্যক্তিগত যোগ্যতার কারণে পিরোজপুর জেলার একটি আসনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তিনি সেখানে দুই বার এমপি নির্বাচিত হন।

সেমিনারে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি 
সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম সহ কয়েকজন অতিথি উপস্থিত থাকলেও বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ডক্টর মাহবুবুল হক , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুর রব,বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ অধিদফতরের
সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইসহাক ,
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি এবং ফেনী -১ আসনে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন সহ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ অতিথি উপস্থিত ছিলেন না।

পুলিশী বাধার মুখে অনুষ্ঠান শেষে আগত অতিথি ও দর্শকদের কাছে বিতরণের জন্য আনা নাস্তা ফেরত দেওয়া হয়। তবে উপস্থিত সাংবাদিকদের কে নাস্তার প্যাকেট দেওয়া হলেও পানির বোতল দেওয়া হয় নি। জাতীয় প্রেসক্লাবের নিচে অতিথিদের কে তাড়াতাড়ি জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে দেখা যায়।

এবি/ওজি