শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

জয়-পরাজয়ে বড় নিয়ামক হতে পারে কাউন্সিল প্রার্থীর ভূমিকা

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩, ২০:১০ | অনলাইন সংস্করণ

  তারেক আহমেদ

আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারনায় মুখর হয়ে উঠেছে গাজীপুর।
টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে ভোটার-প্রার্থীসহ সবার মাঝে।  এরই মধ্যে ভোট চাইতে মাঠে দেখা গেলো ঢাকাই ছবির একঝাঁক তারকাকে। 

রোববার আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নেমে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালায় চিত্রনায়ক ফেরদৌস, রিয়াজ, সাইমন সাদিক, চিত্রনায়িকা নিপুণ, মাহিয়া মাহি ও অভিনেত্রী  সোহানা সাবা, উর্মিলা শ্রাবন্তী কর, জেসমিনসহ অনেকেই।

প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভোটারদের দোর গাড়ায়।  ভোটাররাও প্রার্থীদের আশ্বাস দিচ্ছেন। 

স্থানীয় ভোট বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের এ নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে এ অঞ্চলের নতুন ভোটারা। তাদের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে প্রধান নিয়ামক হতে পারে নগরের কাউন্সিল প্রার্থীদের ভূমিকা ।

তফসিল অনুযায়ী দেশের ৫টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আগামী ২৫ মে ভোট হবে গাজীপুরে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৫ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। 

এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আসন্ন ৫ সিটি নির্বাচনকে টেস্ট ট্রায়াল হিসেবে নিয়েছে কমিশন।

এদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সিটি নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও বিএনপির বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

গাজীপুর মহানগর বিএনপির মহিলা দলের সহসভাপতি খন্দকার নুরুন্নাহার সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তিনি বলেন, মেয়র পদ নিয়েই দ্বন্দ্ব। কাউন্সিলরদের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেয় নাই যে আপনারা দলের থেকে দাড়াতে পারবেন বা করতে পারবেন না।

আরেকজন কাউন্সিলর প্রার্থী মাহাবুবুর রশীদ খান বলেন, বিএনপি মূলত মেয়র নির্বাচন করতেছে না। আর আমরা যারা কাউন্সিলররা আছি বিএনপিপন্থী তারা আসলে জনগণের কাছে দায়বদ্ধতার কারণে নির্বাচনটা করছি।

বিএনপির স্থানীয় নেতাদের অংশগ্রনের কারণে আওয়ামী লীগ মনে করছে, এটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই হচ্ছে। 

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাহ খান বলেন, মহানগর এবং থানা পর্যায়ে বিএনপি এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের অনেক দায়িত্বশীল নেতারা এখানে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন।

"সবমিলিয়ে বলা যাবে না  বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেছে। এটা তাদের কৌশল হতে পারে, কৌশলের কারণে শুধু মেয়র পদে তারা প্রতীকটা দেন নাই।

যদিও  সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অনেকটা একতরফা নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করে অনেকেই। 

আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে গাজীপুরে নির্বাচন করছে না এটা তাদের বিষয়।

"আমরা দেখেছি সেখানে তৃণমূলে, বিশেষ করে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থানীয় বিএনপি নেতারা অংশগ্রহণ করেছেন। আশাকরি অন্যান্য সিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিএনপি তাদের সিদ্ধান্ত বদল করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।

শেষ মুহূর্তের প্রচারনায় প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে তাদের নির্বাচনী তফসিল তুলে ধরে ভোট চাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান সিটি করপোরেশনের অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এই সিটিকে উন্নয়নের মডেল বানাতে চান। 

অন্যদিকে আধুনিক স্থাপত্যবিদ ও নগর পরিকল্পনাবিদদের সহযোগিতায় গাজীপুর সিটিকে একটি পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে জাতীয় পার্টির মেয়র পদপ্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।

গাজীপুর আওয়ামী লীগের মাঠ নেতারা বলছেন, গাজীপুর আওয়ামী লীগে রাজনীতিতে আজমত উল্লা খানের লম্বা ক্যারিয়ার রয়েছে। কিন্তু তার জন্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে । কারণ আলোচিত আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন হতে পারেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোট ৮ জন প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৩৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭৭ জন প্রার্থী ।


এবি/টিএ