কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মজয়ন্তী

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৩, ২১:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ

  মো. তারেক আহমেদ

নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে।
হৃদয় তোমারে পায় না জানিতে, হৃদয়ে রয়েছ গোপনে॥

আজ পঁচিশে বৈশাখ, অনন্য জীবন, অতুলনীয় সাহিত্যকর্ম ও প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্যের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী আজ । চিরজীবী এই কবি হয়তো জানতেন যুগ গুগান্তুরে অমর হয় থাকবে তার সৃষ্টি । আর তাই তো তিনি লিখে গেছেন 

আজি হতে শতবর্ষ পরে

কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি

      কৌতূহলভরে-- 

বিশ্বসাহিত্যের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাদের একজন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে যার অবদান অসামান্য। তার হাত ধরেই বাংলা সাহিত্য পায় নতুন রূপ। কবিতা, গান,  ছোটগল্প,  উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটক, গীতিনাট্য,  নৃত্যনাট্য, ভ্রমণকাহিনী, চিঠিপত্র এবং দেশে বিদেশে প্রদত্ত বক্তৃতামালা সব অঙ্গনকেই তিন রাঙ্গিয়েছেন আপন মহিমায়। তাই তো কবি বলতে পারেন

আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ,
চুনি উঠল রাঙা হয়ে।
আমি চোখ মেললুম আকাশে,
জ্বলে উঠল আলো
পুবে পশ্চিমে।
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম “সুন্দর’,
সুন্দর হল সে।

কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ জন্মগ্রহণ করেন  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। 

বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা কবিগুরু গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী হন।  তিনিই ছিলেন নোবেল বিজয়ী প্রথম এশীয় ও একমাত্র বাঙালি লেখক।
রবীন্দ্রনাথের সমগ্র জীবনের প্রেক্ষাপটেই তাঁর কবিমানস ও সাহিত্যকর্মের স্বরূপ অনুধাবন সম্ভব।

জীবনের পর্বে পর্বে তাঁর জীবনজিজ্ঞাসা ও সাহিত্যাদর্শের পরিবর্তন ঘটেছে। যুগে যুগে পৃথিবীতে সাহিত্য, সংস্কৃতি, সভ্যতা,  দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যে রূপান্তর ঘটেছে, রবীন্দ্রনাথ সবকিছুকেই আত্মস্থ করেছেন গভীর অনুশীলন, ক্রমাগত নিরীক্ষা এবং বিশ্বপরিক্রমার মধ্য দিয়ে। তাই তাঁর সাহিত্যজীবনের নানা পর্যায়ে বিষয় ও আঙ্গিকের নিরন্তর পালাবদল লক্ষণীয়।  রবীন্দ্রনাথ কেবল তাঁর কালের কবি নন, তিনি কালজয়ী। বাংলা কাব্যসাহিত্যের ইতিহাসে তাঁর আবির্ভাব ছিল এক যুগান্তর।

বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে যেসব কবি-সাহিত্যিক প্রতিষ্ঠিত করেছেন,তাঁদের মধ্যে অন্যতম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । তার বিপুল সাহিত্যসম্ভারের যেসব হিসাব পাওয়া যায় সে অনুযায়ী তিনি লিখেছিলেন ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ এবং অন্যান্য আরও গদ্য, ৯৫টি ছোটগল্প এবং দুই হাজারের ওপর গান।সূত্র বিবিসি।

১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট  ৮০ বছর বয়সে  জোড়াসাঁকোর নিজ বাসভবনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ নিশ্বস ত্যাগ করেন।