ইসির সিদ্ধান্ত অবৈধ, বাগেরহাটে চারটি আসন পুনর্বহাল

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

বুধবার প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের লিভ টু আপিল খারিজ করে এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী। ইসির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী।

পরে ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছেন। এ কারণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাগেরহাটে চারটি আসন পুনর্বহাল করে ইসিকে গেজেট জারি করতে হবে। এ ছাড়া গাজীপুরেও আগের মতো ৫টি আসন থাকবে।

১৯৬৯ সাল থেকে বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। সে অনুযায়ী বাগেরহাট-১ ছিল চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট; বাগেরহাট-২ ছিল বাগেরহাট সদর-কচুয়া; বাগেরহাট-৩ ছিল রামপাল-মোংলা এবং বাগেরহাট-৪ ছিল মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা। 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। তারা গড়ে তোলে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি এবং হরতাল-অবরোধসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেন তারা।

কিন্তু নির্বাচন কমিশন গত ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে। এতে চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে বাগেরহাটকে তিন আসনে ভাগ করা হয়। আগের প্রস্তাবের তুলনায় শুধু সীমানা পরিবর্তন করা হয়। এর পর থেকেই সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি আসন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হরতাল, অবরোধ, অবস্থান, বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ইসির আসন পুনর্বিন্যাস গণমানুষের দাবিকে উপেক্ষা করেছে।

চূড়ান্ত গেজেটে বাগেরহাট সদর, চিতলমারী ও মোল্লাহাট নিয়ে বাগেরহাট-১; ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা নিয়ে বাগেরহাট-২ এবং কচুয়া, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ আসন গঠনের কথা বলা হয়। 

বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহালের দাবিতে এরপর হাইকোর্টে দুটি রিট দায়ের করা হয়। বাগেরহাট প্রেসক্লাব, জেলা আইনজীবী সমিতি, জেলা বিএনপি, জেলা জামায়াতে ইসলামী, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতি এ রিট দুটি দায়ের করেন। রিটে বাংলাদেশ সরকার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়।

রিটে পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়। 

এরপর গত ১০ নভেম্বর বাগেরহাটের চারটি আসন থেকে একটি কমিয়ে তিনটি আসন করে নির্বাচন কমিশনের গেজেট অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

আর গত ৩ ডিসেম্বর বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গেজেট জারি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ইসি।

আমার বার্তা/এল/এমই