শ্রমিকদের নামে করা ৪৮ হাজার মামলা প্রত্যাহার একটি ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপ’

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:১৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

তৈরি পোশাক শ্রমিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রায় ৪৮ হাজার ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহারের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক সংশোধনমূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ক্লিন ক্লথস ক্যাম্পেইন (সিসিসি) বাংলাদেশ কোয়ালিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের দ্রুত, মানবিক ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত গণমামলা প্রত্যাহারের পথ সহজ করেছে বলেও জানায় সংগঠনটি।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী, শ্রমিক নেতা, মানবাধিকারকর্মীসহ সিসিসির সদস্য ও অংশীদাররা।

সংবাদ সম্মেলনে সিসিসি জানায়, ২০২৩ সালের ন্যূনতম মজুরি আন্দোলনের সময় রপ্তানি খাতের চারটি শিল্প পুলিশ অঞ্চলে (আশুলিয়া, কালিয়াকৈর, কোনাবাড়ী ও জয়দেবপুর) মোট ৪৫টি মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে ৪১টি ছিল মজুরি আন্দোলনের সময় দায়ের, আর বাকি মামলাগুলো ২০১৫ এবং ২০২১ সালের আন্দোলন সংশ্লিষ্ট। এসব মামলায় মোট আসামি ছিল ৪৭ হাজার ৭২৮ জন। যেখানেই অধিকাংশই বেনামী বা অজ্ঞাতনামা।

সিসিসি বলছে, আন্দোলনে তিন শ্রমিক নিহত, শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশসহ মালিকপক্ষের বিভিন্ন কর্মকর্তা মামলার বাদী। শ্রমিকদের আন্দোলন ঠেকাতে বেনামী মামলা দীর্ঘদিন ধরেই হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।

একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে জানিয়ে বলা হয়, কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য তুলে ধরে সিসিসি নেতারা বলেন যে, প্রায় সব মামলাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখনো শুধু একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের ওপর দীর্ঘদিনের ভীতি-চাপ কমাবে এবং ন্যায়সংগত শিল্পসম্পর্ক পুনর্গঠনে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

মামলা দায়েরের পর সিসিসি তাদের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক সক্রিয় করে ব্র্যান্ড, ক্রেতা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক কূটনৈতিক ও অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম চালায়। সংগঠনটি জানায়- আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ করা হয়। কারখানাগুলোকে মামলা প্রত্যাহারে চাপ তৈরি করা হয়। শ্রমিকদের তালিকা ও প্রকৃত তথ্য সংগ্রহে বাংলাদেশি সংগঠনগুলো মাঠে কাজ করে। সলিডারিটি সেন্টার শ্রমিকদের আইনি সহায়তা ও জামিনে সহযোগিতা করে। ফলে যেসব মালিক শুরুতে অনড় ছিলেন, তারাও অবশেষে মামলা প্রত্যাহারে রাজি হন।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই। বর্তমান সরকার দ্রুত, মানবিক ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত নিয়ে গণমামলা প্রত্যাহারের পথ সহজ করেছে।

আমার বার্তা/এল/এমই