আগামী রোববার চূড়ান্ত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:১৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

কবে হবে ভোট, ভোট হবে কিনা; নানা প্রশ্ন রয়েছে সাধারণ মানুষের মনে। এসব প্রশ্নের অবসান ঘটিয়ে ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করতে আগামী রোববার (৭ ডিসেম্বর) বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাউসদ।

তফসিল কবে ঘোষণা হবে ও ভোটের সম্ভাব্য তারিখ কবে হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ভোটের কয়েকটি তারিখ আলোচনা করেছি। আগামী রোববার (৭ ডিসেম্বর) এ নিয়ে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা বলছি আগামী সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার, এর মধ্যে যে কোনও দিন তফসিল ঘোষণা করে দেবো এবং তা (তফসিল) হঠাৎ করেই হবে।

এদিকে গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মক ভোটিংয়ের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেদিন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন তফসিল প্রসঙ্গে বলেন, তফসিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। ইনশাল্লাহ সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণভোট কমিশন জাতিকে উপহার দিতে পারবে।  

এ দিকে জানা যায়, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন পরে কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন আগেও হতে পারে। অর্থাৎ মাঝামাঝি কোনও সময় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানা যায়, ভোটগ্রহণের সময়ও বাড়ানোর কথা ভাবছে ইসি। এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, যেহেতু গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একদিনে হবে, তাই গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানো কথা ভাবা হচ্ছে। আবার ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ৯ ঘণ্টা করা হতে পারে। এজন্য সকাল-বিকালে দু'দিকেই সময় বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এখন সকাল ৮ থেকে ভোট শুরু হয়, সেটা সাড়ে ৭টা হতে পারে। আবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট হয়, সেটা সাড়ে ৪টা করার কথা ভাবা হচ্ছে।

সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেই শুরু থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে সরকার থেকে গণভোটের ঘোষণা আসায় অতিরিক্ত ব্যালট পেপার, অতিরিক্ত গোপন কক্ষ (ভোট দানের কক্ষ), বাজেট বৃদ্ধিসহ বেশ কিছু অতিরিক্ত প্রস্তুতি নিতে হয়েছে ভোট আয়োজনকারী সাংবিধানিক এ সংস্থাটিকে। ইতোমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আইন-বিধি সংশোধন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন, পর্যবেক্ষক নিবন্ধন, অধিকাংশ ছাপার কাজ শেষ করছে। অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপও শেষ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের সব বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক শেষ করেছ, এখন বাজেট নিয়ে আলোচনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। 

এর আগে মক ভোটিংয়ের দিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছিলেন, জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটও একইদিনে আয়োজন করতে হবে। এজন্য সময় ব্যবস্থাপনা বড় চ্যালেঞ্জ। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সাধারণ ভোট এবং অতিরিক্ত গণভোট মিলিয়ে ভোটার প্রতি সময় কত লাগবে—মক ভোটিংয়ের মাধ্যমে সেটাই যাচাই করা হচ্ছে। ৪২ হাজার ৫০০টির বেশি পোলিং স্টেশন যথেষ্ট কিনা বা অতিরিক্ত বুথ ও স্টেশন প্রয়োজন হবে কিনা তা আজকের রিয়েল-টাইম মূল্যায়নের ভিত্তিতেই ঠিক করা হবে। নতুন বুথ মানে অতিরিক্ত লোকবল, সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা—এসবই বাস্তব পর্যবেক্ষণ থেকে নির্ধারণ করা হবে।

সেসময় ভোটারদের দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, এটিও মূল্যায়নের অংশ। কোথায় ঘাটতি আছে, কোথায় পরিকল্পনায় ভুল ছিল—সেগুলো চিহ্নিত করে সংশোধন করা হবে। মানুষের কষ্ট বাড়ানো নয়, বরং সময় কমিয়ে সুবিধা নিশ্চিত করাই কমিশনের লক্ষ্য। খরচ কমানোই প্রধান উদ্দেশ নয়; প্রয়োজনে বুথ বাড়িয়ে সময় কমানো হবে।


আমার বার্তা/এমই