লাশের ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া শনাক্ত করা সম্ভব নয়: ফায়ার সার্ভিস

প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২১:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে রাসায়নিক গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার হওয়া ১৬টি মরদেহই পোশাক কারখানার ভবন থেকে পাওয়া গেছে। তবে তাঁদের কারও পরিচয়ই জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া তাঁদের পরিচয় জানা সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। ‎

‎তাজুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডে গার্মেন্টস অংশ থেকে মোট ১৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজন ভলান্টিয়ার আহত হয়েছেন। তবে এই দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের কেউ আহত হননি। ‎

‎মৃতদেহগুলো একে একে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মৃতদেহগুলোর অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া তাঁদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব নয়। চেহারা দেখে কিংবা অন্য কোনোভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। ‎

‎তাজুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে যে বিস্ফোরণটি হয়েছে, তাতে যে সাদা ধোঁয়া বা টক্সিক গ্যাস উৎপন্ন হয়েছিল, তা অত্যন্ত বিষাক্ত। আগুন লাগার প্রথম দিকেই ফ্ল্যাশ ওভার হয়েছিল এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষাক্ত গ্যাসের কারণে আকস্মিকভাবেই হয়তো নিহতরা সেন্সলেস হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তীকালে মারা গেছেন।

‎তাজুল ইসলাম বলেন, মৃতদেহগুলো দোতলা এবং তিনতলা মিলিয়ে বিভিন্ন কর্নারে পাওয়া গেছে। তাঁরা নিচেও নামতে পারেননি এবং ওপরে ছাদে যাওয়ার যে গ্রিলের দরজা ছিল সেটি দুটি তালা দিয়ে বন্ধ ছিল, সে কারণে ওপরেও যেতে পারেননি। ফলে দুই ও তিনতলায় অধিকাংশ মানুষ মারা যায়।

‎আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ফায়ার সার্ভিসের মোট ১২টি ইউনিট এই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে এবং এখনো কাজ করছে। গার্মেন্টস অংশের আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। কিন্তু রাসায়নিকের গুদামের আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণ হয়নি। অগ্নিনির্বাপণের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, রাসায়নিক গুদামটি এখনো সেফ বা নিরাপদ না। সেখানে এখনো শিখা রয়েছে এবং ধোঁয়া উঠছে। এই আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আরও সময় লাগতে পারে।

‎গুদামে রাসায়নিক পণ্যের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, যতটুকু জানা গেছে, রাসায়নিকের গুদামে ছয়-সাত ধরনের কেমিক্যাল ছিল। আগুন নিয়ন্ত্রণে ও সার্চিং কার্যক্রমে হিউম্যানলেস টেকনোলজি, যেমন—লুপ ৬০ ড্রোন এবং গ্রাউন্ড মনিটর ব্যবহার করা হচ্ছে। আগুন নেভানোর জন্য সাধারণত পাউডার, ওয়াটার, এনজাইম এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডও ব্যবহার করা হচ্ছে। লাশ বের করার জন্য কিছুক্ষণ সার্চিং অপারেশন বন্ধ রাখা হয়েছিল বলেও জানান তিনি। ‎

‎আশপাশের শ্রমিকদের জিজ্ঞাসা করেও গার্মেন্টসটির নাম জানা যায়নি বলেও জানান তিনি। রাসায়নিক গুদাম ও পোশাক কারখানার কোনো ধরনের বৈধতা ছিল না বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা। ‎


আমার বার্তা/এমই