লুইসের প্রশংসা

প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফর অত্যন্ত সফল

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:০৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইস।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এক বার্তায় এ তথ্য জানান।

সাক্ষাতে গুইন লুইস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০ তম অধিবেশনে অংশ নিতে অধ্যাপক ইউনূসের নিউইয়র্ক সফর ‘অত্যন্ত সফল মিশন’ ছিল বলে প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, ওই সফরে প্রধান উপদেষ্টা বেশকিছু সংখ্যক বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন এবং রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে জাতিসংঘের ঐতিহাসিক সম্মেলনে বক্তব্য রেখেছেন। এ সফরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে প্রথমবারের মতো প্রধান রাজনৈতিক দলের ছয় নেতার অন্তর্ভুক্তি জাতীয় ঐক্যের এক শক্তিশালী উদাহরণ স্থাপন করেছে।

বৈঠকে উভয়পক্ষ টেকসই সহযোগিতা, উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তারা একমত হন যে, বাংলাদেশ এখন একটি নতুন অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে, যেহেতু দেশটি ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং উন্নয়নের নতুন যাত্রা— দুটোরই প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নিজের মেয়াদের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে গুইন লুইস বলেন, গত সাড়ে তিন বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের সেবা করা আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সম্মান ও সুযোগ।

তিনি আরও বলেন, আমি সরাসরি এই জাতির স্থিতিস্থাপকতা, সৃজনশীলতা ও উদারতা প্রত্যক্ষ করেছি। সরকার, নাগরিক সমাজ ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করা গভীরভাবে অনুপ্রেরণাদায়ক।

অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লুইস বলেন, সামাজিক উদ্ভাবন ও ন্যায়বিচারের প্রতি অধ্যাপক ইউনূসের আজীবন নিষ্ঠা বিশ্বজুড়ে কোটি মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে। তার নেতৃত্ব অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ধারণাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে।

তার দায়িত্বকালে জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন সহযোগিতা কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে নানা ফলপ্রসূ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এই সহযোগিতার পাঁচটি কৌশলগত অগ্রাধিকার ছিল— অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সবার জন্য সমতাভিত্তিক মানবকল্যাণ, পরিবেশগত সহনশীলতা, অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা এবং লিঙ্গসমতা।

লুইসের দায়িত্বকালীন সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন ছিল ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার হাই কমিশনারের কার্যালয় উদ্বোধন। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যক্রম আরও শক্তিশালী এবং অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগিতা গভীরতর হয়েছে।

জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতিতে সহায়তা এবং শ্রম, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সংস্কারমূলক উদ্যোগে অংশীদারিত্ব করেছে। জলবায়ু কার্যক্রম ছিল জাতিসংঘের সব প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দু। পরিবেশগত টেকসই ও দুর্যোগ প্রস্তুতি জোরদারে সমন্বিত কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।

লুইস বৈশ্বিক উদ্যোগগুলোতে বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন-যেমন ‘সবার জন্য আগাম সতর্কবার্তা’, ‘শিক্ষা রূপান্তর উদ্যোগ’ এবং খাদ্য ব্যবস্থা সম্মেলন’। এসব ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের অংশীদারিত্ব যৌথ মূল্যবোধ এবং একটি সমৃদ্ধ, জলবায়ু-সহনশীল ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভিত্তিক। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ—কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে, এবং আমাদের সকল প্রচেষ্টায় লিঙ্গ সমতা ও মানবাধিকারকে কেন্দ্রস্থলে রাখা হবে।


আমার বার্তা/এমই