বিচার দেখানোর জন্য হলে নতুন অবিচার হয়ে যায়: সারা হোসেন
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:২৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

‘দেখানোর জন্য যদি বিচার হয়, তখন অনেক ধরনের নতুন অন্যায়-অবিচার হয়ে যায়’—বলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। তিনি বলেন, ‘যাঁরা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন, অবশ্যই তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে যে বিচার যেন সুষ্ঠু ও ন্যায় হয়। তা না হলে এ বিচার টিকবে না। আর যাঁরা বিচার চাইবেন, তাঁরাও সন্তুষ্ট হবেন না।’
বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনার শিরোনাম ছিল ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং ইনিশিয়েটিভ ইন পোস্ট কনফ্লিক্ট অব বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি এবং বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ।
মেট্রোরেলে দেশি কাচ ও তার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত
মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার প্রসঙ্গে সারা হোসেন বলেন, ‘আলোচনায় গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের কথা এসেছে। কিন্তু গণগ্রেপ্তারের কথা আনা হবে কি না, একেকজনের বিরুদ্ধে যে একাধিক কিংবা শতাধিক মামলাও রয়েছে, এ ধরনের ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আওতায় রাখা হবে কি না, তা ভাবতে হবে। এ ঘটনা এখনো চলছে। বিচার বিভাগও বিষয়টি নিয়ে কোনো তোয়াক্কা করছে না।’
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের সহায়তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের সবার অবস্থা কিন্তু এক রকম না। একেকজনের একেক অঙ্গহানির ঘটনা ঘটেছে। সে জন্য সবার অবস্থা কিন্তু এক না। কেউ কেউ আছেন, যাঁরা দুই চোখ হারিয়েছেন। সে জন্য এটাকে (সহায়তা) যার যার জন্য আলাদা করে দেখার প্রয়োজন আছে।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে আলোকচিত্রী শহিদুল আলম বলেন, ‘পতিত সরকারের আমলে যাঁরা গুম-খুনের ভুক্তভোগী, তাঁরা যখন কেঁদে মরছেন, তা দেখার কেউ নেই। এমনকি সহানুভূতিটুকুও হয়তো কারও কারও নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে বারবার দাঁড়িয়ে সেমিনার করে যাচ্ছি। এটা কি আমরা করে যাব? ঘুরেফিরে আমরা সেমিনার করব, মিডিয়া আমাদের সামনে থাকবে, এটা একটা নাটকে পরিণত হোক—এটাই কি আমরা চাইব? এটা আমাদের মনে রাখতে হবে।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে শহিদুল আলম বলেন, ‘ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে যেন রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য ব্যবহার করা না হয়। এই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এই সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে। এখানে দ্রুত বিচারের কথা বলা হয়েছে। দ্রুত বিচার করতে গিয়ে যেন কারও সঙ্গে অন্যায় করা না হয়, সেটিও খেয়াল রাখতে হবে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ মানবাধিকারবিষয়ক উপদেষ্টা হুমা খান, অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য মুস্তাইন জহির, প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ জিয়ানুল কবির, ব্রিগেডিয়ার (অব.) হাসান নাসির, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত সাইফ আরেফিন।
আমার বার্তা/এমই