জুলাই দিয়েছে ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের সংকল্প: প্রধান উপদেষ্টা
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৪৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

“একটি ন্যায় ও সাম্যভিত্তিক, বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আমাদের জুলাই দিয়েছে।”—জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এমন মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, “এক বছর আগে এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় রচিত হয়েছিল। জনগণের যূথবদ্ধ প্রতিরোধের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটে, দেশ ফিরে পায় গণতন্ত্রের পথ।”
সোমবার (০৪ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের আপামর জনগণ—যাদের দীর্ঘ সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ফসল এই অর্জন—তাদের সবাইকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।”
তিনি বলেন, “আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। স্মরণ করছি আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ‘জুলাই যোদ্ধা’দের, যারা চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন কিংবা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জাতি তাঁদের আত্মত্যাগ কখনও ভুলবে না।”
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, “টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল একটি সম্মিলিত বিস্ফোরণ। এর মূল লক্ষ্য ছিল একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও দমনমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”
তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এই লক্ষ্যে রাষ্ট্রযন্ত্রের সব খাতে সংস্কার কার্যক্রম চালু করেছে। চলছে ‘জুলাই গণহত্যা’র বিচার, শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং আহতদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক ও নির্বাচনব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় সকল খাতে সংস্কার আনতে আমরা রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। টেকসই রাজনৈতিক সমাধান ও একটি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
বাণীতে তিনি বলেন, “জুলাই আমাদের দিয়েছে নতুন করে স্বপ্ন দেখার সাহস—একটি ন্যায় ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন। হাজারো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে রাষ্ট্রগঠনের সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থান্ধ গোষ্ঠী এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।”
বাণীর শেষাংশে তিনি আহ্বান জানান—“আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।”
আমার বার্তা/এমই