পিলখানা হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছিল

জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন

প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৫, ১৩:২৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেছেন, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছিল।

বুধবার (২৫ জুন) পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

তদন্তের জন্য নোটিশ পাওয়া দুজন পলাতক আওয়ামী নেতার জবানবন্দি নিয়েছে স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এই দুই নেতা ই-মেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।

তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী মির্জা আজম

স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, বেঁচে ফিরে আসা ১৫ জন অফিসারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৫০ জন বেঁচে যাওয়া অফিসারদের লিখিত জবানবন্দি প্রদান করার জন্য সেনা সদরের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি দেয়া হয়েছে। দুটি সম্মেলনে তাদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।

রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সাক্ষ্য : তিনি বলেন, ৮ জন সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের সাক্ষাৎকার জেলে নেয়া হয়েছে। ৩ জন উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ২ জন পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা ইমেইলে জবানবন্দি দিয়েছেন।

সামরিক বাক্তি : জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বলেন, ৫৫ জন সামরিক অফিসার যারা বিভিন্নভাবে পিলখানা ট্র্যাজেডির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন তাদের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক সাবেক সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান, বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান ও অন্যান্য উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।

অসামরিক ব্যক্তি : ২০ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, আমলা ও পূর্বতন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

পুলিশ কর্মকর্তা : তিনি আরও বলেন, তৎকালীন আইজিপি, ডিএমপি কমিশনার ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।

বেসরকারি ব্যক্তি :  মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান আরও বলেন, ৯ জনের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি যাদের কাছে ঘটনা সংশ্লিষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে।

কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি : কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত ২৫ জন বিডিআর সদস্যের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। তারা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত সে সম্পর্কে নানা ধরণের তথ্য দিয়েছে যেগুলো এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আরও সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

বিডিআর সদস্যদের সাক্ষ্যগ্রহণ : ২৯ জন কারামুক্ত বিডিআর সদস্যের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে।

মোট সাক্ষ্য গ্রহণ : মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান বলেন, সর্বমোট ১৫৮ জনের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে এবং আরও প্রায় ৫০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি আছে।

বিদেশী সংস্থা ও দূতাবাস : জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সভাপতি বলেন, ৬টি দেশের দূতাবাস ও ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।


আমার বার্তা/জেএইচ