অর্থনীতির অধিকাংশ সূচক ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৫, ০৫:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব গ্রহণকালে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ভয়াবহ। ভয়ংকরভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতিও এতটা খারাপ থাকে না, যতটা খারাপ করে দিয়েছে ১৬ বছরের লাগামহীন লুটপাটতন্ত্র।

তিনি বলেন, আশার বিষয় হচ্ছে শুধু ব্যাংক নয়, প্রত্যেকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জনগণের আমানত এখন নিরাপদ। অর্থনীতির অধিকাংশ সূচক ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে। আমাদের অর্থনীতির ইতিবাচক ধারা বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আকৃষ্ট করছে।

শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্যে নেমে যাওয়ার ভয়ে পতিত সরকার বিদেশি ব্যবসায়ীদের আয় নিজ দেশে নিতে দিচ্ছিল না। আমরা সেটা নিরসন করেছি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে ইতিবাচক অবস্থায় নিয়ে আসতে পেরেছি।

তিনি বলেন, এ অর্থবছরে আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটি বাজেট দিতে যা সত্যিকার অর্থে জনকল্যাণমুখী হয়। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি বাজেট তার আগের বছরের চেয়ে ছোট হয়েছে। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। এই বাজেট প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান নয়, এই বাজেটে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে মানুষকে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নজরদারি বাড়ানোর ফলে রপ্তানি আয় বেড়েছে। অর্থনীতির দুঃসময়ে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে এগিয়ে এসেছেন, যার ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ সময় জাতির পক্ষ থেকে সব রেমিটেন্স যোদ্ধাকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর অর্থ পাচার রোধে কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এছাড়া পুরোনো আমদানি দায় পরিশোধ হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরও চাপ কমে এসেছে। রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্যে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি একটি বড় কাঠামোগত সংস্কার। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশাল আকারের দুর্নীতি কমবে, রাজস্ব ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে, স্বার্থের দ্বন্দ্ব কমবে এবং রাজস্ব আহরণের আওতা সম্প্রসারিত হবে।

ড. ইউনূস কার ভাষণে বলেন, অর্থনীতিসহ বিগত মাসগুলোতে সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় ছোট-বড় বহু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। মোট ৫৪টি মন্ত্রণালয়ে এক হাজারেরও বেশি সংস্কার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা যে সংস্কার কমিশন করেছিলাম তাদের সুপারিশের মধ্য থেকে আশু করণীয় সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করে যাচ্ছে। মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ৫৪টি মন্ত্রণালয়ে ১২৯টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

 

আমার বার্তা/এল/এমই