এক ও অভিন্ন চাকরি বিধির আওতায় এলেই কাটবে পল্লী বিদ্যুতের সংকট
সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫, ১৩:৫১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পিবিএস) ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চলমান সংকটের একমাত্র সমাধান হিসেবে দুই প্রতিষ্ঠানকে এক ও অভিন্ন চাকরি বিধির আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম।
বুধবার (৪ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সুপারিশ করেন। ক্যাবের পক্ষ থেকে ‘আরইবি–পিবিএস দ্বন্দ্ব নিরসনে সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
শামসুল আলম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও আরইবির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘ দিনের। দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও দোষারোপের মাধ্যমে পরিস্থিতি আজ চরমে পৌঁছেছে। এই সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছে। বরং সরকার এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে এমন পথে হাঁটছে, যা আগুনে ঘি ঢেলেছে।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকেই আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলোর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুৎ খাতকে বেসরকারিকরণের চেষ্টা চলছে। তবে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। তার রেখে যাওয়া দায় এখন বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টার ঘাড়ে এসে পড়েছে।
শামসুল আলম অভিযোগ করেন, এই সংকটের সূচনায় ক্যাব একটি তদন্ত শুরু করেছিল। প্রথম পর্ব সরকারের কাছে জমা দেওয়া হলেও দ্বিতীয় অংশে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত ক্যাব স্থগিত রাখে। কারণ বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে ক্যাব প্রত্যাশিত সহযোগিতা পায়নি।
তিনি বলেন, কিছু কিছু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি লাভে আছে। তবে বেশিরভাগই লসে থাকে। অন্যদিকে, আরইবি সবসময় লাভে থাকে। সরকার প্রতিবছর বিদ্যুৎ খাতে ৬০–৭০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়, যার সিংহভাগই যায় পল্লী বিদ্যুতে। সরকার যদি বিশ্বব্যাংক–এডিবির পথ অনুসরণ করে, তাহলে পল্লী বিদ্যুৎ খাত একটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক খাতে পরিণত হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে সরবরাহকৃত মোট বিদ্যুতের প্রায় ৬০ শতাংশ ব্যবহার করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে এর খরচও বাড়ছে। ফলে বিদ্যুৎ খাতকে আমদানি নির্ভর বাজারে পরিণত করার প্রক্রিয়ায় এই খরচ বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বাজারকে আমদানি বাজারে পরিণত করা। ভারতের ক্রসবর্ডার এনার্জি ট্রেডিং পলিসি তারই প্রমাণ। তাই ক্যাব পল্লী বিদ্যুৎকে বাণিজ্যিকীকরণ করার উদ্দেশ্যে কোম্পানি করার মত গণস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপের সুস্পষ্টভাবে বিরোধিতা করছে।
পল্লী বিদ্যুতের প্রধান সমস্যা হলো অসমতা ও বৈষম্য। তা নিরসনের জন্য পল্লী বিদ্যুৎকে বাণিজ্যিক পণ্য বানাতে হবে এমন ধারণা অবাস্তব। এডিবি-বিশ্বব্যাংক এমন ভাবনা ভাবলেও সরকারের তেমন ভাবার সুযোগ নেই। যে সমস্যার একমাত্র সমাধান আরইবি-পিবিএসকে এক ও অভিন্ন চাকরি বিধির আওতায় আনা।
আমার বার্তা/জেএইচ