সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন যে ২৪ রাজনীতিবিদ

প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫, ১৫:৩২ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। ওই সময় দেশে সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে পৌঁছায়। প্রাণরক্ষায় সাবেক স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ মোট ৬২৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। এদের মধ্যে ২৪ জন ছিলেন রাজনীতিবিদ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানায়, প্রাণনাশের আশঙ্কায় যেসব ব্যক্তি সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ৫ জন বিচারক, ১৯ জন বেসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা, ৫১৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ৫১ জন পরিবার-পরিজন (স্ত্রী ও শিশু)। সব মিলিয়ে মোট ৬২৬ জনকে দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়।

সংস্থাটি জানায়, ওই সময়ে শুধুমাত্র মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই এই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা এসব মানুষের প্রাণ রক্ষা করাই ছিল সেনাবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য।

সংস্থাটি আরও জানায়, পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া অধিকাংশ ব্যক্তি এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই নিজ উদ্যোগে সেখান থেকে চলে যান। তাদের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে নির্ধারিত অভিযোগ ও মামলার ভিত্তিতে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয়।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সেনানিবাসে আশ্রয়প্রাপ্তদের বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট একটি আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই দিন ১৯৩ জন ব্যক্তির একটি তালিকা (৪৩২ জন সাধারণ পুলিশ সদস্য ও ১ জন এনএসআই সদস্য ব্যতীত) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। যা ছিল একটি মীমাংসিত বিষয়।

সেনানিবাসে আশ্রয়প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য রাজনীতিকরা হলেন-

১. জুনায়েদ আহমেদ পলক – সাবেক আইসিটি মন্ত্রী

২. সায়েদুল হক সুমন – তৎকালীন সংসদ সদস্য

৩. শিরীন শারমিন চৌধুরী – সাবেক স্পিকার

৪. নাজমা আকতার – তৎকালীন সংসদ সদস্য

৫. সামসুল হক টুকু – সাবেক ডেপুটি স্পিকার

৬. ছোট মনির – তৎকালীন সংসদ সদস্য

৭. ইকবালুর রহিম – তৎকালীন সংসদ সদস্য

৮. শাজাহান খান – সাবেক সংসদ সদস্য

৯. রাগিবুল আহসান রিপু – তৎকালীন এমপি, বগুড়া-৬

১০. এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন – তৎকালীন এমপি, বগুড়া-৪

১১. এমএ লতিফ – তৎকালীন সংসদ সদস্য

১২. কাজী নাবিল আহমেদ – সাবেক সংসদ সদস্য

১৩. তালুকদার আবদুল খালেক – তৎকালীন মেয়র, খুলনা সিটি করপোরেশন

১৪. হাবিবুন নাহার – তৎকালীন এমপি, বাগেরহাট-৪

১৫. মো. ইকরামুল হক টিটু – তৎকালীন মেয়র

১৬. মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী – তৎকালীন মেয়র, সিলেট সিটি করপোরেশন

১৭. মো. আবু জাহির – তৎকালীন এমপি, হবিগঞ্জ-৩

১৮. জিয়াউর রহমান বিপ্লব – কাউন্সিলর, বরিশাল সিটি করপোরেশন

১৯. এসএম রফিউদ্দিন আহমেদ – ওয়ার্ড কাউন্সিলর

২০. এসএম ফয়সাল আহমেদ রানা – ওয়ার্ড কাউন্সিলর

২১. শরিফ কামাল – তৎকালীন চেয়ারম্যান, মিঠামইন উপজেলা

২২. মো. মাহবুব আলম – তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান, মাদারগঞ্জ

২৩. সুজন সাত্তার – পিএস টু এমপি

২৪. জাকির হাসান – তৎকালীন এসপি, বগুড়া (যদিও প্রশাসনিক পদে ছিলেন, রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত)


আমার বার্তা/জেএইচ