জাতীয় কর্মশালায় বক্তারা

আয়বর্ধক হতে পারে নগর কৃষি

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:৫৭ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

দেশে ছাদ কৃষি বা নগর কৃষির অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। এই কৃষিতে বর্তমানে অনেকেই ঝুঁকছেন। তাই নগর কৃষি এখন শুধু সৌখিনতা নয়, আয়বর্ধকও হতে পারে। নিরাপদ শাক-সবজি, ফল উৎপাদনের মাধ্যমে নিজের চাহিদা পূরণ করে উদ্যোক্তা হতে পারেন কৃষি ব্যবসায়ী। পাশাপাশি নগর কৃষি সম্প্রসারণ হলে সবুজায়ন হবে নগরী। ঘটবে সবুজ বিপ্লব। উষ্ণতা কমে যাবে। সুরক্ষিত হবে পরিবেশ। যা নাগরিক জীবনযাত্রায় অত্যন্ত সহায়ক হবে। তাই সুবিধানুযায়ী ছাদ কৃষি বা নগরে ফসল চাষের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীতে এক জাতীয় কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, আগে নগরীর বাড়ির ছাদে বাগান করতেন অনেক সৌখিন ব্যক্তি। ছাদ বাগান হল সৌখিনতা ও আনন্দদায়ক। কিন্তু ছাদ কৃষি সম্পূর্ণ আলাদা, আন্তরিকতা থাকতে হয়। অল্প পরিসরের জায়গায় উপরের দিকে বাউনি দিয়ে অনেক ফসলের চাষ করা যায়।

ঢাকাসহ চার সিটি করপোরেশনে নগর কৃষি কার্যক্রমের সাফল্য শক্তিশারীকরণ বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ে লার্নিং শেয়ারিং কর্মশালার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র। 

খামারবাড়ির আ কা মু গিয়াস উদ্দিন মিলকি অডিটরিয়ামে আয়োজিত এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রশিকার চেয়ারম্যান রোকেয়া ইসলাম। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি উন্নয়ন কর্মী ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব ও উপপ্রকল্প প্ররিচালক মুস্তাফিজুর রহমান, প্রশিকার প্রধান নির্বাহী সিরাজুল ইসলাম ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক এসএম সোহরাব উদ্দিন। 

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের টিম লিডার সুমনা রানী দাস। ফুড কিউবে ফসল চাষ বিষয়ে আরেকটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. নাজিম উদ্দিন। উন্মুক্ত আলোচনায় অনেকেই অংশ নেন। 

অনুষ্ঠানে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, টাউন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, স্থানয়ি ও আন্তর্জাতিক এনজিওর প্রতিনিধি, বীজ কোম্পানির প্রতিনিধি, বাগানী, নার্সারীর প্রতিনিধি, প্রদর্শনী বাগানীর প্রতিনিধি, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) কর্মকর্তা ও প্রশিকার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরশেন এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে ৩মাস ব্যাপী নগর কৃষি কার্যক্রমের সাফল্য শক্তিশালীকরণে শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তাবয়ন করছে প্রশিকা। ঢাকা ফুড সিস্টেমের আওতায় প্রকল্পটি তত্ত্বাবধান করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। 

নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটির কারিগরি সহযোগিতায় রয়েছে নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিয়্যেন ইউনিভার্সিটি ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে ৬ হাজার জন নগর বাগানী ও ৪০টি প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি সেবা এবং ছাদ কৃষি মোবাইল ফোন অ্যাপস ও হেল্প ডেস্কের মাধ্যমে ই-কৃসি সেবা দেওয়া হচ্ছে। 

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে পারিবারিক পর্যায়ে নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদন, বাগানীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ উন্নয়ন। প্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যে ৬৫০০জন বাগানী প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। এছাড়া ২০টি প্রতিষ্ঠানে প্রদর্শনী বাগন স্থাপন করা হয়েছে। এফএও সাড়ে ৬ হাজার উপকারভোগীকে বাগান সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় উপকারণ সহযোগিতা দিয়েছে। 

এরমধ্যে রয়েছে প্রতি বাগানীকে ২০ রকমের শীত ও গ্রীষ্মকালীন বীজ, ৫০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট, ২ কেজি করে ইউরিয়া-টিএসপি ও এমওপি সার, ১০, ১৫ ও ২০ গ্যালনের ৭টি জিও ব্যাগ, কৃষি যান্ত্রপাতি-কোদাল, পানির ক্যান, নিড়ানী এবং আম, লেবু, বরই, মাল্টা ও ড্রাগন ফলের চারা।

আমার বার্তা/জেএইচ