মুক্তিপণ নেওয়ার পর শিশুহত্যা: আসামি মকবুলের ফাঁসির আদেশ
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:৩৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

প্রায় দেড় বছর আগে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ১০ বছরের শিশু তাওহীদ ইসলামকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পর হত্যার ঘটনায় একমাত্র আসামি মো. মকবুল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১২ নভেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মকবুল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার লাখিরচর এলাকার বাসিন্দা। আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এছাড়া অপর ধারায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও আরও ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, আসামির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানার অর্থ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নিহত শিশুর পরিবারকে প্রদান করতে হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এরশাদ আলম জর্জ জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আদালত থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায় ঘোষণার পর শিশুটির মা তাসলিমা আক্তার, বোন ও নানী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, “সাজা কার্যকর হলে আমাদের তাওহীদের আত্মা শান্তি পাবে।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর রসুলপুর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় নাজেরা বিভাগে পড়ত ১০ বছরের তাওহীদ ইসলাম। গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে মামার দোকানে যায় সে। মামাকে না পেয়ে একাই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে মকবুল হোসেন তাকে অপহরণ করে এবং পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি জানায়।
পরদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মকবুলের নির্দেশিত স্থানে মুক্তিপণের টাকা রেখে আসে শিশুটির মামা। কিন্তু অর্থ নেওয়ার পরও তাওহীদকে ফেরত দেয়নি আসামি। পরে পরিবারটি র্যাবের কাছে অভিযোগ জানালে অভিযান চালিয়ে মকবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি ভবনের সেফটিক ট্যাংক থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর তাওহীদের মা তাসলিমা আক্তার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে উপপরিদর্শক এ কে এম সাইদুজ্জামান গত বছরের ৩১ জুলাই মকবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলার বিচার চলাকালে মোট ১৮ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আমার বার্তা/জেএইচ
