হবিগঞ্জে জামায়াত নেতা হত্যা মামলায় ১৪ জনের যাবজ্জীবন
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৪১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

হবিগঞ্জ পৌর জামায়াতের নেতা ও ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান চৌধুরী হত্যা মামলায় একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আরও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে হবিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মামলার প্রধান আসামি শফিকুল আলম চৌধুরীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং আরও ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ১০ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে বাদী ও আসামিপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের সামনেই উভয়পক্ষ একে অপরের ওপর হামলার চেষ্টা করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার মকা গ্রামের শফিকুল আলম চৌধুরীর সঙ্গে তার চাচাতো ভাই হবিগঞ্জ পৌর জামায়াতের ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি ও ব্যবসায়ী মহিবুর রহমান চৌধুরীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। ২০১৩ সালের ১৭ জুন সন্ধ্যায় ওই বিরোধের জেরে হবিগঞ্জ শহরের পুরান মুন্সেফী এলাকায় মহিবুর রহমান চৌধুরীকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
ঘটনার পর নিহতের বড় ভাই মুজিবুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে শফিকুল আলমকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ২০১৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
২০১৭ সালের ১০ আগস্ট ১৯ আসামির বিরুদ্ধে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে মোট ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সোমবার এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ আসামি হলেন: সেবুল মিয়া, মুকসুদ মিয়া, জাহাঙ্গীর মিয়া, শহিদুল আলম চৌধুরী আকিক, মুকিব মিয়া, সায়েদ মিয়া, আলমগীর মিয়া, তারা মিয়া, আব্দুল কাইয়ুম, রুবেল, নাহিদ, শামিম ও রতিশ মিয়া।
রায়ে বুলবুল মিয়া ও জুয়েল মিয়াকে মামলা থেকে খালাস প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলা চলাকালীন সময়ে আসামি আকবর হোসেন, আব্দুল কাইয়ুম ও শাহজাহান মিয়া মৃত্যুবরণ করায় আদালত তাদের অব্যাহতি প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট গুলজার খান এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান।
রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের ভাই মাহফুজ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই রায়ে আমরা হতাশ, উচ্চ আদালতে আপিল করব।’ একইভাবে আসামিপক্ষও রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গুলজার খান বলেন, ‘এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
আমার বার্তা/এল/এমই