অবৈধ বিজ্ঞাপন থেকে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার আয় মেটার
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্মস। যার অধীনে রয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ। তাদের আয়ের এক বড় অংশ নাকি আসে প্রতারক বিজ্ঞাপন থেকে! আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য।
রয়টার্স জানিয়েছে, মেটার নিজস্ব এক হিসাব অনুযায়ী ২০২৪ সালে তাদের মোট বার্ষিক আয়ের প্রায় ১০ শতাংশ (প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার) এসেছে ভুয়া ও প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন থেকে। অভ্যন্তরীণ নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, গত তিন বছর ধরে কোম্পানিটি অবৈধ জুয়া, ভুয়া বিনিয়োগ প্রকল্প ও নিষিদ্ধ ওষুধের প্রচার ঠেকাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এসব বিজ্ঞাপন অনেক সময় এমন পণ্য বা সেবার প্রতিশ্রুতি দেয়, যা আদৌ অস্তিত্বহীন। এতে প্রতারিত হন সাধারণ ব্যবহারকারীরা।
মেটার কাছে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন শনাক্তের একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা আছে। তবে কোম্পানি কেবল তখনই কোনো বিজ্ঞাপনদাতার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে। যখন তারা ৯৫ শতাংশ নিশ্চিত হয় যে বিজ্ঞাপনটি প্রতারণামূলক। এর আগে পর্যন্ত মেটা সেই সন্দেহভাজন বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বিজ্ঞাপনমূল্য আদায় করে। যেন তারা ভবিষ্যতে বিজ্ঞাপন না দেয়। কিন্তু বাস্তবে বিজ্ঞাপনগুলো চালু থাকে আর মেটার আয় বাড়তেই থাকে।
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মেটার মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন রয়টার্সকে বলেন, “প্রতিবেদনে মেটার নীতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।”
তিনি দাবি করেন, গত ১৮ মাসে মেটা প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন সম্পর্কিত ব্যবহারকারীর অভিযোগ ৫৮ শতাংশ কমাতে পেরেছে এবং ১৩ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভুয়া বিজ্ঞাপন সরিয়ে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি মেটা আসলেই ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিত তবে বিজ্ঞাপন যাচাই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হতো। বরং এখন মনে হচ্ছে, ব্যবহারকারীদের বিশ্বাসের জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত করেও রাজস্ব আয়ের পথটিই কোম্পানির কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ যেভাবে তথ্য, ছবি ও অভিজ্ঞতা ভাগ করেন। সেখানে প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনের প্রসার কেবল অর্থনৈতিক ঝুঁকিই নয়—এটি ব্যবহারকারীর আস্থা ও নিরাপত্তার জন্যও এক বড় হুমকি।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, যদি মেটা এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নেয় তবে ভবিষ্যতে ব্যবহারকারীর বিশ্বাস হারিয়ে নিজের ব্র্যান্ডমূল্যেই আঘাত পেতে পারে প্রতিষ্ঠানটি।
আমার বার্তা/জেএইচ
