মানবতাবিরোধী হাসিনা: রাজনৈতিক আধিপত্য থেকে মৃত্যুদণ্ডের আসামি
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আদালতে প্রমাণিত মানবতাবিরোধী শেখ হাসিনার দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিল আধিপত্য। সেখান থেকে তিনি এখন মৃত্যুদণ্ডের আসামি।
১৯৭৫ সালে সেনা অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবর রহমান স্বপরিবারে নিহত হলেও বেঁচে যান হাসিনা। এরপর ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আসেন বাংলাদেশে। প্রথমে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করলেও দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী থাকা হাসিনার শাসনামল ছিল বিরোধী দলের নেতাদের দমন ও বাক স্বাধীনতা হরণে পরিপূর্ণ।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ১৫ মাস পর তার বিরুদ্ধে ছাত্রদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগ প্রমাণিত হয়েছে। ওই সময় শত শত মানুষ গুলিতে নিহত হন।
৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে অর্থনৈতিক ও গার্মেন্টস খাত উন্নয়নের কৃতিত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশংসা পেয়েছিলেন তিনি।
পতন হওয়ার মাত্র সাত মাস আগে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন হাসিনা।
সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে প্রথমে আন্দোলন শুরু হলেও; সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার গুলি ও হামলার কারণে এটি সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয় হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে প্রায় ১ হাজা ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের বেশিরভাগেরই প্রাণ গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। জাতিসংঘ জানায়, সরকার বিরোধী আন্দোলনকারীদের দমাতে প্রাণঘাতী পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন হাসিনা।
হাসিনা ১৯৪৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে জন্ম নেন। পাঁচ ভাইবোনের সবার বড় ছিলেন তিনি। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে ডিগ্রি নেন এ স্বৈরশাসক।
১৯৭৫ সালে তার পিতা শেখ মুজিব সেনাঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারানোর সময় তিনি ইউরোপে ছিলেন। এতে করে বেঁচে যান। এরপর ভারতে এসে নির্বাসিত জীবন শুরু করেন। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে ফিরে এসে আওয়ামী লীগের প্রধান হন।
১৯৯০ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সরকারের পতনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাত মেলান তিনি। কিন্তু তাদের ঐক্য বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। এরপর তারা দুজন কয়েক দশক বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী হয়েছিলেন।
হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসে। এরপর ২০০৯ সালের আবারও সরকার গঠন করেন। গণঅভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ক্ষমতা দখল করে রেখেছিলেন তিনি।
সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসিনা স্বৈরাশাসকে পরিণত হন। তার শাসনামলে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর ব্যাপক দমন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে। - সূত্র: রয়টার্স
আমার বার্তা/এমই
