ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় ত্রাণ মিশন বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ জাতিসংঘের
প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা প্রায় দুই বছর ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।
এছাড়া ইসরায়েল গাজা উপত্যকা অবরোধ করে রেখেছে এবং এর জেরে সেখানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থায় জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় প্রায় অর্ধেক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ইসরায়েল বাধাগ্রস্ত করেছে বা বিলম্বিত করেছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় দপ্তর (ওসিএইচএ)-এর তথ্য উদ্ধৃত করে সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বৃহস্পতিবার জানান, গাজার ভেতরে মানবিক কার্যক্রম এখনও বিলম্ব ও বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। এমনকি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ যেসব মিশনের অনুমোদন দিয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন করতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, “অনেক সময় টিমগুলোকে বিপজ্জনক, যানজটপূর্ণ বা অচল সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।”
ডুজারিক জানান, গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য করা ৮৯টি প্রচেষ্টার মধ্যে মাত্র ৫৯ শতাংশ কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ প্রাথমিকভাবে অনুমোদন পেলেও পরে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, ৮ শতাংশ সরাসরি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং ৭ শতাংশ সংগঠকরা নিজেরাই প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
বাধাগ্রস্ত ২৩টি মিশনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত পাঁচটি সম্পন্ন হয়েছে, যার মধ্যে ছিল সীমান্ত থেকে সরবরাহ সংগ্রহ এবং রোগী সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম। তবে বাকি ১৮টি শেষ করা সম্ভব হয়নি।
মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে গাজা সিটির আরও এলাকায় ইসরায়েল নতুন করে বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালাতে পারে। তার ভাষায়, “যদি পূর্ণমাত্রার অভিযান শুরু হয়, তবে এর প্রভাব হবে ভয়াবহ। শুধু গাজা সিটির নয়, পুরো উপত্যকার জন্য।”
ডুজারিক আরও জানান, জাতিসংঘের জনসংখ্যা পর্যবেক্ষণ টিমের তথ্য অনুযায়ী সোমবার ও মঙ্গলবার প্রায় ১৩০০ মানুষ গাজার উত্তরাংশ থেকে দক্ষিণে পালিয়েছে। গত ১৪ আগস্ট ইসরায়েল নতুন অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষ উত্তর থেকে দক্ষিণে গিয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে এখন পর্যন্ত গাজা সিটি থেকে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, “গাজার সর্বত্র লাখ লাখ পরিবার অতিরিক্ত ভিড়, অমানবিক ও অনিরাপদ অবস্থায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন।”
আমার বার্তা/জেএইচ