গাজা শহর দখলে ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা মোতায়েন করবে ইসরাইল

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৫০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আগামী কয়েক সপ্তাহে অতিরিক্ত ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে ডাকবে ইসরায়েল। একই সময়, আরও ২০ হাজার সেনার দায়িত্বের মেয়াদ বাড়ানো হবে বলেও জানিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।

বুধবার (২০ আগস্ট) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ঘনবসতিপূর্ণ গাজার বিভিন্ন এলাকায় নতুন সামরিক অভিযান চালানোর অনুমোদন দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে গাজা সিটির চারপাশে ধাপে ধাপে ‘সুনির্দিষ্ট ও লক্ষ্যভিত্তিক’ অভিযান চালানো হবে। এরই মধ্ই জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের এই অভিযানে গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। উপত্যকার অধিকাংশ বাসিন্দা বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, বহু এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের হুমকির মধ্যে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে।

আল-জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানান, গাজা সিটির বাসিন্দারা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শহরের পূর্বাঞ্চলে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে একের পর এক ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় এক পিতা রাতের বোমা হামলায় তার সন্তানদের হারিয়েছেন। অথচ ইসরায়েল ওই স্থানটিকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলে ঘোষণা করেছিল।

বুধবারের ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১০ জন খাদ্য সহায়তা খুঁজতে গিয়ে প্রাণ হারান।

>> যুদ্ধবিরতির চেষ্টা

ইসরায়েলের এই অভিযানের প্রস্তুতির মাঝেই কাতার ও মিশরের নেতৃত্বে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে নতুন করে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা চলছে। প্রস্তাবিত কাঠামোতে রয়েছে ৬০ দিনের অস্ত্রবিরতি, ধাপে ধাপে জিম্মি ও বন্দি বিনিময় এবং মানবিক সহায়তার প্রবাহ বাড়ানোর পরিকল্পনা।

কাতার জানিয়েছে, বর্তমান প্রস্তাব আগের একটি প্রস্তাবের প্রায় অনুরূপ, যা ইসরায়েল মেনে নিয়েছিল। মিশর বলেছে, এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা ইসরায়েলের। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখনো প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। গত সপ্তাহে তিনি বলেছিলেন, সব বন্দি একসঙ্গে মুক্তি এবং যুদ্ধ শেষ করার শর্তগুলো মানতে হবে।

হামাসের শীর্ষ নেতা মাহমুদ মারদাউই বলেন, আমরা সমঝোতার দরজা উন্মুক্ত করেছি। কিন্তু প্রশ্ন হলো নেতানিয়াহু আবারও তা বন্ধ করবেন কি না, যেমন তিনি অতীতে করেছেন।

>> প্রাণহানির সর্বশেষ হিসাব

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই সাধারণ মানুষ। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। - সূত্র: আল-জাজিরা


আমার বার্তা/এমই