ইরানের জাহাজ নেটওয়ার্ককে লক্ষ্য করে বড় নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৪৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

ইরানকে আরও চাপে ফেলতে এবার দেশটির জাহাজ পরিবহন নেটওয়ার্ক ও পরিষেবা ব্যবস্থার ওপর বড় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয়। ইরানের জাহাজ নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ১১৭ ব্যক্তি, কোম্পানি এবং জাহাজ নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে।
ট্রেজারি বিভাগের নতুন এই নিষেধজ্ঞার আওতায় পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ পরিবহন নেটওয়ার্কের ‘পুরোধা’ হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ হোসেইন শামখানি আছেন। মোহাম্মদ হোসেনইন শামখানির পিতা আলী শামখানি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একজন উপদেষ্টা।
ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাবার প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে ইরানের জাহাজ পরিবহন নেটওয়ার্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হয়ে উঠেছেন হোসেইন খামশানি। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থাকায় বহির্বিশ্বের কাছে নিজেদের জ্বালানি তেল নিজেরা বিক্রি করতে পারে না ইরান, মধ্যস্থতাকারীদের সাহায্য নিতে হয়। এই মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং তাদের কাছে তেল পৌঁছে দেওয়ার জন্য কন্টেইনার ও ট্যাংকার জাহাজগুলোর বিস্তৃত নেটকওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব খামশানির হাতেই।
তেল রপ্তানি খাত থেকে প্রতি বছর যে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে ইরান, সেক্ষেত্রেও অবদান আছে হোসেইন খামশানির। ট্রেজারি বিভাগের দাবি, খামশানি তার ব্যক্তিগত যোগাযোগের ব্যবহার এবং নানা কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে তেল বাণিজ্য থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি ডলার তেহরানকে ‘উপহার’ দেন, যা তেহরান ব্যয় করে নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে।
সার্বিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে ইরানের ১৫টি জাহাজ নির্মাণ কোম্পানি, ৫২টি জাহাজ, ১২ জন ব্যক্তি এবং ১৭টি দেশের ৫৩টি কোম্পানি। বিদেশি এই কোম্পানিগুলো ইরানের জাহাজ পরিবহন সংক্রান্ত বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে উল্লেখ করেছে ট্রেজারি মন্ত্রণালয়।
ট্রেজারি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, নতুন এই নিষেধাজ্ঞার মূল উদ্দেশ্য বহির্বিশ্বে ইরানের তেল বিক্রিকে আরও কঠিন করে তোলা।
“২০২৫ সালের শুরুর দিকে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি দিন গড়ে ১৮ লাখ ব্যারেল (১ ব্যারেল=১৫৯ লিটার) তেল রপ্তানি করছিল, বর্তমানে তা নেমে দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ব্যারেলে। আমরা আশা করছি, নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে ইরানের তেল বিক্রি আরও কঠিন হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে আমরা প্রত্যাশা করছি যে নিষেধাজ্ঞার জেরে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে কোনো অস্থিতিশীলতা আসবে না। যদি তেমন পরিস্থিতি দেখা দেয়— ওয়াশিংটন তাকে কোনোভাবেই উৎসাহিত করবে না।
গত জুন মাসে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের সময় ‘অপারেশন মিড নাইট হ্যামার’ পরিচালনার মাধ্যমে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মুহুর্মুহু আঘাত হেনেছিল মার্কিন সেনা বাহিনী। সেই সংঘাতের পর এই প্রথম ফের দেশটির বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ নিলো ওয়াশিংটন।
সূত্র : রয়টার্স
আমার বার্তা/জেএইচ