দুর্নীতির অভিযোগে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ছুটিতে
ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ‘স্পষ্ট’
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ১০:২৭ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান কৌঁসুলি করিম খানকে আচরণগত অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চলাকালীন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আদালতের পরিচালনাকারী সংস্থা, অ্যাসেম্বলি অব স্টেটস পার্টিজ (এএসপি)।
করিম খান বর্তমানে যৌন হয়রানির একটি অভিযোগের মুখোমুখি, যার তদন্ত করছে জাতিসংঘের একটি বহিঃস্থ সংস্থা— যা ইউএন অফিস অব ইন্টারনাল ওভারসাইট সার্ভিসেস নামে পরিচিত। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আইসিসি জানিয়েছে, করিম খানের অনুপস্থিতিতে ডেপুটি কৌঁসুলি নাজহাত শামীম খান এবং মামে মানদিয়ায় নিয়াং কৌঁসুলির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডেপুটি কৌঁসুলিরা নিশ্চিত করতে চান যে অফিসের কাজকর্মে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে এবং যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধের নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচারকাজ ব্যাহত না হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ও ইসরাইলের প্রেক্ষাপট
গত ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটন আইসিসি’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে করিম খান ছিলেন একমাত্র কর্মকর্তা যার নাম প্রকাশ্যে আসে। বিশেষ করে, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়ার পর থেকেই করিম খানের বিরুদ্ধে চাপে আসে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় আসার পরই আইসিসি ও সহযোগী কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এতে করিম খানসহ অন্য দেশীয় ব্যক্তিদেরও লক্ষ্যবস্তু করা হয়, যারা আইসিসি’র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্রদের বিরুদ্ধে তদন্তে সহায়তা করেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের তথ্য অনুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার কারণে খান তার অফিসিয়াল মেইল (যা মাইক্রোসফট হোস্ট করতো) ব্যবহারে অক্ষম হয়ে পড়েন এবং বিকল্প হিসেবে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রোটন মেইল ব্যবহার শুরু করেন।
এছাড়াও, আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ কিছু তদন্ত কার্যক্রম—যেমন সুদানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত—ব্যাহত হয়েছে বলে জানিয়েছে এপি। ছয়জন সিনিয়র কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন নিষেধাজ্ঞার ভয়ে।
তবে আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালতের কাজ সব পরিস্থিতিতে অব্যাহত রয়েছে।
‘পদত্যাগ নয়, তদন্তের স্বচ্ছতা রক্ষার প্রয়াস’: করিম খান
রয়টার্সের হাতে আসা এক চিঠিতে করিম খান জানান, তদন্ত প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও কার্যালয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার স্বার্থে তিনি স্বেচ্ছায় কিছুদিন দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
তিনি লেখেন, এই সিদ্ধান্ত আমার পক্ষ থেকে আদালতের মর্যাদা, স্বচ্ছতা ও তদন্ত প্রক্রিয়ার প্রতি গভীর দায়িত্ববোধ থেকে এসেছে।
তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, খান পদত্যাগ করেননি এবং সে রকম কোনো পরিকল্পনাও নেই। তারা আরও বলেন, গণমাধ্যমে যেভাবে বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে, তা তার কাজকে প্রভাবিত করছে।
আমার বার্তা/জেএইচ