পুরুষেরই বেশি হয় ভেরিকোসিল
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক

ভেরিকোসিল কী :
অণ্ডকোষ থেকে উপরের দিকে বিস্তৃত শিরাগুলোর অস্বাভাবিক ফুলে যাওয়া ও পেঁচানো অবস্থার নামই ভেরিকোসিল।
কোন বয়সে বেশি হয়? :
সাধারণত শৈশব ও কৈশোর বয়সে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি এবং প্রায় ১৫% পুরুষরা এই রোগে আক্রান্ত হন। ব্যপ্তি অনুপাতে এই রোগের বিভিন্ন ধরনের জটিলতা পরিলক্ষিত হয়- বন্ধ্যাত্ব তার মধ্যে অন্যতম। বাম দিকে এই রোগটা বেশি দেখা গেলেও ডান পাশ বা উভয় দিকেও হতে পারে। বিভিন্ন কারণে এ রোগ হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কারণটা অজানাই রয়ে যায়।
কারণ :
জ্ঞাত কারণগুলোর মধ্যে পেটের দুই বড় ধমনীর মধ্যে অণ্ডকোষ শিরা চাপা পড়া বা বাম কিডনি শিরার চাপ সরাসরি অণ্ডকোষের শিরায় পড়া এবং জন্মগতভাবে শিরার একমুখী কপাটিকার অনুপস্থিতি বা দুর্বলতাসহ কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের নানাবিধ টিউমার এ রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে ধরে নেয়া যায়।
সাধারণত: লম্বা, পাতলা, স্মার্ট গড়নের পুরুষরা এই রোগের উপসর্গ নিয়ে আসেন; সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট অণ্ডকোষে ব্যথা থাকে, যেটা উপরের দিকে ছড়িয়ে যায়, অণ্ডকোষ এর শিরাগুলো ফোলা ও পেঁচানো থাকতে পারে যা কিনা দেখেই বোঝা যায় বা হাতের ছোঁয়ায় পাতলা ব্যাগ ভর্তি কৃমি বা কেঁচোর মতো অনুভূত হয়। পাশাপাশি পেটের কোনো টিউমার নিয়েও রোগীরা আসেন কেউ কেউ ।
রোগ নির্ণয় :
বিশেষজ্ঞ ইউরোলজিস্টগণ ক্ষেত্রবিশেষে রোগীকে দাঁড়িয়ে ও শোয়া অবস্থায় পরীক্ষা করে রোগটা নির্ণয় করতে পারেন। তবে কালার ডপলার আলট্রাসাউন্ড করলে সামগ্রিক চিত্রটা ভালভাবে বোঝা যায়-বিশেষ করে সার্জারির পূর্বে অবশ্যই এটা করে নিতে হবে। রোগের ব্যপ্তি অনুযায়ী এটা চার প্রকারের হয়। গ্রেড শূন্য থেকে গ্রেড তিন। ভেরিকোসিল পরবর্তী অণ্ডকোষ ছোট বনে যেতে পারে, অণ্ডকোষের ভিতরের প্রকৃতি পাল্টে যেতে পারে যার ফলশ্রুতিতে শুক্রাণুর গুণগত মানের অবনতি ঘটে বিধায় শেষমেষ বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত ঘটতে পারে।
চিকিৎসা:
প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয় যেমন ব্যথার উপশমকারী ওষুধের সাথে আরো কিছু ব্যবস্থাপত্র দেয়া হয়। তবে যেক্ষেত্রে শিরাগুলো বেশি মাত্রায় ফুলে যায় বা পেঁচানো থাকে, সার্বক্ষণিক কষ্টদায়ক ব্যথা থাকে যা ওষুধে কমে না, বন্ধ্যাত্ব বা কিছু ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের পূর্বশর্ত হিসেবে এ রোগের শৈল্য চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।
ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা গেলেও অপারেটিং অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে শৈল্য চিকিৎসায় সব থেকে বেশি সুফল পাওয়া যায়। নিজ থেকে পরীক্ষা করে সন্দেহ করা মাত্রই বিশেষজ্ঞ ইউরোলজিস্ট এর শরণাপন্ন হলে ভালো হয়।
লেখক : প্রফেসর ডা. নিতাই পদ বিশ্বাস, ইউরোলজিস্ট এবং ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইউরোলজি বিভাগ জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট হাসপাতাল। চেম্বার : আলোক হেলথ কেয়ার লি. মেট্রোরেল স্টেশন সংলগ্ন, মিরপুর-১০, ঢাকা । হটলাইন:১০৬৭২, ০৯৬৭৮৮২২৮২২
এবি/ জেডআর